স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নতুন নিয়োগবিধিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে যে সব আবেদন দায়ের হয়েছিল, বুধবার সব আবেদন খারিজ করে দিল দুই বিচারপতির বেঞ্চ। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, এসএসসির বিজ্ঞপ্তিতে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। এর ফলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে আর কোনো আইনি বাধা রইল না।
রাজ্যের হয়ে মামলায় সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলাকারীদের হয়ে ছিলেন অনিন্দ্য মিত্র ও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। শুনানির সময় এজি যুক্তি দেন, ২০১৯ সালে প্রণীত নিয়োগবিধির ভিত্তিতে এসএসসি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের প্রক্রিয়া মেনেই নিয়োগ করতে বলেছে, এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি।
আদালত জানায়, নিয়োগকারী সংস্থার অধিকার আছে কোন যোগ্যতামান মানা হবে, সেটি নির্ধারণ করার। কমিশনের নতুন নিয়োগবিধিতে পরীক্ষার নম্বর বিভাজন, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা, ইন্টারভিউ, এবং বয়সসীমা নির্ধারণের বিষয়টি তাই এসএসসির এক্তিয়ারে পড়ে।
রায় ঘোষণার পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা রাজ্যের বড় জয়। আদালত রাজ্যের যুক্তিকে মান্যতা দিয়েছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলেনি ২০১৬ সালের নিয়মেই চলতে হবে। তাহলে সেই যুক্তিতে নিয়োগ বন্ধ রাখা কি যুক্তিযুক্ত ছিল?”
অন্যদিকে, মামলাকারীরা অভিযোগ করেন, নতুন বিধিতে একতরফা পরিবর্তন করা হয়েছে, যা ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের প্রতি অবিচার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ব্যাখ্যার দিকেই ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
প্রসঙ্গত, ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর। সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগবিধি অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এসএসসি। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, লিখিত পরীক্ষা হবে ৬০ নম্বরের, শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য ১০ নম্বর, ইন্টারভিউ ও অভিজ্ঞতার জন্যও বরাদ্দ থাকবে নম্বর।
বুধবার আদালতের রায়ে সেই পুরো নিয়োগ কাঠামোই এখন আইনি বৈধতা পেল।
আরও পড়ুন: বাংলায় কথা বললেই সন্দেহ! নাগরিকত্বের প্রশ্নে কেন্দ্রকে হলফনামা দিতে বলল হাই কোর্ট