Home রাজ্য উঃ দিনাজপুর চোপড়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের, ধৃত জেসিবি যেন গ্রামের ‘প্রশাসক’

চোপড়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের, ধৃত জেসিবি যেন গ্রামের ‘প্রশাসক’

চোপড়ার সাম্প্রতিক ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হওয়ার পর সোমবার চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ঘটনার পর তাঁর মন্তব্য নিয়েই রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা হয়েছিল। হামিদুল বলেন, ‘‘যা হয়েছে তা একদমই ঠিক হয়নি। আমি মেনে নিচ্ছি। ওই জায়গায় জাতপাত সংক্রান্ত সমস্যা হলে সালিশি সভা হয়। একে আমি বা আমার দল একদমই সমর্থন করি না। আমার নামে অপপ্রচার হচ্ছে যে, আমি নাকি বলেছি, ‘মুসলিম রাষ্ট্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটে’। আমি ‘মুসলিম রাষ্ট্র’ কথাটি মুখেই আনিনি। বিরোধীরা আমার নামে অপপ্রচার করছে। আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।’’

চোপড়ার ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব সরব হয়েছেন। বিজেপির জাতীয় সভপতি জেপি নড্ডা এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের একটি ভয়ঙ্কর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, যা বর্বরতার কথা মনে করিয়ে দেয়। আরও খারাপ লাগছে যে তৃণমূলের বিধায়ক এবং ক্যাডারেরা বিষয়টিকে মান্যতা দিচ্ছেন। সন্দেশখালি হোক, উত্তর দিনাজপুর হোক বা অন্য কোনও জায়গা, দিদির পশ্চিমবঙ্গ মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়।’’

সাংসদ কঙ্গনা রানাউতও এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারও সমালোচনার সুরে কথা বলেছেন।

জেসিবি কে?

এদিকে, মারধরের ঘটনায় জেসিবি নামে এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর আসল নাম তাজমুল। চোপড়ার লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা জানান, গোটা গ্রামে তাজমুলই ‘প্রশাসক’ হিসেবে পরিচিত। তিনি বিধায়ক হামিদুল রহমানের ঘনিষ্ঠ এবং লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সেই সুবাদেই এলাকায় চলত জেসিবি-র দাপট। তাঁর ভয়ে পুলিশ প্রশাসন এবং সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে ভয় পেতেন সবাই।

গত শনিবার সালিসি সভায় তালিবানি কায়দায় অত্যাচারের দৃশ্য এক ব্যক্তি মোবাইলে বন্দি করেছিলেন এবং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। সেখানকার বাসিন্দারা তা শেয়ারও করেছিলেন। কিন্তু সূত্রের খবর, জেসিবি-র কানে বিষয়টি পৌঁছতেই যে ব্যক্তি ভিডিয়ো করেছিলেন, তিনি গ্রামছাড়া হয়ে যান। যাঁরা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন, তাঁরাও ভিডিয়োটি তুলে নেন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বিধানসভা চত্বরে অবস্থান শুরু করল বিজেপি

কোচবিহার ও চোপড়া ঘটনার প্রতিবাদে বিধানসভার সামনে ধর্নায় বসেন বিজেপির মহিলা বিধায়করা। বিজেপি বিধায়ক ও মহিলা মোর্চা নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল এই ধর্নার কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। তাদের দাবি, শাসক দলের নেতৃত্বে রাজ্যে সন্ত্রাস চলছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস চোপড়ার ঘটনায় রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাজভবন সূত্রে খবর, এই ঘটনায় তিনি নভান্নার স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version