Home খেলাধুলো ফুটবল আইএসএল: চেন্নাইয়িন এফসিকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক মোহনবাগানের

আইএসএল: চেন্নাইয়িন এফসিকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক মোহনবাগানের

0
জয়ের পরে আনন্দ। ছবি আইএসএল ফেসবুক থেকে নেওয়া।

মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট: ৩ (দিমিত্রি পেত্রাতোস, জেসন কামিংস, মনবীর সিং) চেন্নাইয়িন এফসি: ১ (রাফায়েল ক্রিভেলারো)

চেন্নাই: পর পর তিনটি ম্যাচে জিতল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। এ বারের ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (আইএসএল) ভালো ভাবেই শুরু করেছে তারা। শনিবার তৃতীয় ম্যাচটি ছিল অ্যাওয়ে ম্যাচ। প্রথম দুটি ম্যাচ ছিল ঘরের মাঠে। যে আধিপত্য নিয়ে এ দিন চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে খেলল সবুজ-মেরুন বাহিনী, তাতে বোঝাই যায়নি তারা প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়িন এফসি-র মাঠে খেলছে।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপুটে খেলা খেলে এ দিন দু’বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইন এফসি-কে ৩-১ গোলে হারাল গতবারের চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান। প্রথমার্ধে মোহনবাগান ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে চেন্নাইয়িন এফসি ১টি গোল শোধ করে। পরের মিনিটেই মোহনবাগান আর-একটি গোল করে ৩-১ গোলে জয়লাভ করে।

দলের তিন গোলেই সহায়তা করেছেন কেরল থেকে আসা মিডফিল্ডার সহাল আবদুল সামাদ। তিন গোলদাতাকে কার্যত তিনিই গোল সাজিয়ে দেন। এ দিন নিজের সেরা ফর্মে ছিলেন এই তারকা ফুটবলার। পুরো ম্যাচটা অসাধারণ খেলে গেলেন তিনি। প্রতিপক্ষের গোল এলাকায় রীতিমতো ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন। এ দিন হ্যাটট্রিক করতে পারতেন সহাল। সেই সুযোগ নষ্ট করলেন। এ দিন সহালই ম্যাচের সেরা হন।

প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে মোহনবাগান  

প্রথমার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে মোহনবাগান। তবে মাঝেমাঝে প্রতি- আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টা করে চেন্নাইয়িন এফসি। তবে কিছু পরেই ম্যাচ পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় মোহনবাগান। ম্যাচের ২২ মিনিটে প্রথম গোল পায় মোহনবাগান। বক্সের ডান দিক থেকে সহাল মাঝারি উচ্চতার মাপা ক্রস দেন অস্ট্রেলীয় তারকা পেত্রাতোসের উদ্দেশে। সুযোগটি কাজে লাগান তিনি। সেই বলে ঠিকঠাক মাথা ছুঁইয়ে চেন্নাইয়ের জালে বল জড়িয়ে দেন পেত্রাতোস। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।

এর পরে সহাল অন্তত তিন বার চেন্নাইয়ের গোলের সামনে পৌঁছে যান। দু’বার তাঁর শট একটুর জন্য গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়। এক বার চেন্নাইয়ের ডিফেন্ডার গোললাইন সেভ করেন। এ ভাবেই মোহনবাগানের দ্বিতীয় গোলটি চলে আসে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটের মাথায়। এই গোলটিও জেসন কামিংসকে কার্যত সাজিয়ে দেন সহাল। এ বার বাঁ দিক দিয়ে উঠে চেন্নাইয়ের একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কামিংসকে বল বাড়ান সহাল। হালকা টোকায় চেন্নাইয়ের গোলে বলল ঠেলে দেন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপার। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

দ্বিতীয়ার্ধে ফল দাঁড়াল ৩-১

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল শোধ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে চেন্নাইয়িন। তারা বাগানের বক্সে ঢুকে আক্রমণ শানানোর চেষ্টা করে। তবে সবুজ-মেরুন বাহিনীর রক্ষণ সজাগ ছিল। তবু এরই মধ্যে ৫৫ মিনিটের মাথায় গোলের মুখ দেখে চেন্নাইয়িন। ফ্রি কিক থেকে গোল করেন পরিবর্ত খেলোয়াড় রাফায়েল ক্রিভেলারো। ওয়ালে দাঁড়ানো শুভাশিসের গায়ে লেগে তাঁর ফ্রি কিক গতিপথ পালটে গোলের বাঁ দিকের ওপরের কোণ দিয়ে মোহনবাগানের গোলে ঢুকে যায়। গোলকিপার বিশাল কায়েথ ঝাঁপিয়ে পড়েও তার নাগাল পাননি। 

কিন্তু পরের মিনিটেই মোহনবাগানের হয়ে তৃতীয় গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে দেন মনবীর সিং। এই গোলেরও অনেকটা কৃতিত্ব সেই সহালের। চেন্নাইয়িনের বক্সের সামনে একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের ডান দিকে থাকা অরক্ষিত মনবীরকে কোণাকুনি পাস বাড়ান সহাল। গোল করতে ভুলচুক করেননি মনবীর। প্রথম পোস্টের ভিতর দিয়েই জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি। চেন্নাইয়িনের গোলকিপারের কিছু করার ছিল না। বাগান এগিয়ে যায় ৩-১ গোলে।

এর পরেও মোহনবাগান গোলের সংখ্যা আরও বাড়াতে পারত। চেন্নাইয়িনের গোলকিপারকে একা পেয়েও ব্যর্থ হন অনিরুদ্ধ থাপা। ৬৯ মিনিটে সহালের দুরন্ত থ্রু থেকে বল পেয়ে আরমান্দো সাদিকুর উদ্দেশে নিচু ক্রস দেন মনবীর। কিন্তু তার নাগাল পাননি সাদিকু। পাঁচ মিনিট পরেই পেত্রাতোস ও সাদিকু নিজেদের মধ্যে বল আদানপ্রদান করে গোলের সুযোগ তৈরি করলেও শেষ পর্যন্ত চেন্নাইয়ের রক্ষণ ভাগের খেলোয়াড় তা আটকে দেন। ৭৬ মিনিটে কর্নার থেকে মনবীরের ফ্লিক গোলে ঢুকে যেতে পারত। কিন্তু চেন্নাইয়িনের গোলকিপারের হাতে লেগে তা বাইরে চলে যায়। মোহনবাগান শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে জেতে।

টানা তৃতীয় ম্যাচ জিতে ন’ পয়েন্ট নিয়ে লিগতালিকার শীর্ষেই থাকল মোহনবাগান। অন্য দিকে চেন্নাইয়িন এফসি লিগ তালিকার সর্বশেষ স্থানে নেমে গেল। তিন ম্যাচে এই নিয়ে আট গোল খেল তারা। এই দিনই লিগে তারা গোলের খাতা খুলল।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version