Home খেলাধুলো ফুটবল আইএসএল: ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে মোহনবাগান লিগ শীর্ষে

আইএসএল: ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে মোহনবাগান লিগ শীর্ষে

0
লিস্টন কোলাসোকে নিয়ে দিমিত্রি পেত্রাতোসের উল্লাস। ছবি: সঞ্জয় হাজরা

মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট ৩ (জেসন কামিংস, লিস্টন কোলাসো, দিমিত্রি পেত্রাতোস)

ইস্টবেঙ্গল এফ সি ১ (সাউল ক্রেসপো)

কলকাতা: প্রায় একপেশে খেলা হল রবিবারের ডার্বি ম্যাচ। এ দিন আইএসএল-এর লিগ ম্যাচে রীতিমতো দাপট নিয়ে খেলল মোহনবাগান। এ দিনের খেলায়, বিশেষ করে প্রথমার্ধে, ইস্টবেঙ্গলকে প্রায় খুঁজেই পাওয়া গেল না। তারই ফলস্বরূপ মোহনবাগান ম্যাচ জিতে নিল ৩-১ গোলে।

এ দিনের জয়ের সুবাদে আইএসএল-এর শীর্ষে উঠে গেল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। ১৭ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ৩৬ পয়েন্ট। মুম্বই সিটিরও সংগ্রহ ৩৬ পয়েন্ট। কিন্তু তারা মোহনবাগানের থেকে একটি ম্যাচ বেশি খেলেছে।

সল্ট লেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ম্যাচে এ দিন মোহনবাগানের হয়ে গোল করেন জেসন কামিংস, লিস্টন কোলাসো এবং দিমিত্রি পেত্রাতোস। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন সাউল ক্রেসপো।

তবে দিমিত্রি পেত্রাতোসের নাম আলাদা করে বলতে হয়। তিনি শুধু ১টা গোলই করেননি, অন্য দুটি গোলের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকাই ছিল মুখ্য। কার্যত তিনিই গোলদুটি করান। তা ছাড়া ডার্বি ম্যাচেও পেত্রাতোস দিনদিন একটি উল্লেখযোগ্য নাম হয়ে উঠছেন। এ দিনের গোল নিয়ে ডার্বি ম্যাচে এই অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের ৩টি গোল হয়ে গেল।

মোহনবাগান প্রথমার্ধেই ৩টি গোল করে এগিয়ে যায়। ইস্টবেঙ্গল একমাত্র গোলটি করে দ্বিতীয়ার্ধে। ইস্টবেঙ্গল প্রথমার্ধে ছন্নছাড়া ফুটবল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে তারা অনেকটাই ম্যাচে ফেরে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলাটা যদি তারা প্রথমার্ধে খেলত, তা হলে ফুটবলপ্রেমীরা এ দিন একটি হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ দেখার সুযোগ পেত। তবে এটাও ঠিক, প্রথমার্ধেই ৩ গোলে এগিয়ে যাওয়ার সুবাদে দ্বিতীয়ার্ধে মোহনবাগান তাদের খেলায় একটু ঢিলে দিয়ে দিয়েছিল। আর তারই সুযোগ নিয়ে ইস্টবেঙ্গল কিছুটা হলেও ম্যাচে ফিরেছিল।

প্রথমার্ধেই ৩-০ এগিয়ে মোহনবাগান

ম্যাচের ২ মিনিটেই গোল করার সুযোগ পায় মোহনবাগান। দিমিত্রি পেত্রাতোসের ফ্রি কিকে মাথা ছুঁইয়ে বলটি ইস্টবেঙ্গলের বক্সের মাঝামাঝি পৌঁছে দেন আনিসা আনোয়ার। সেই বলে ফের মাথা ছোঁয়ান হেক্টর ইউস্তে। কিন্তু বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।

এর পরেই আক্রমণে উঠে আসে ইস্টবেঙ্গল। ৬ মিনিটের মাথায় নাওরেম মহেশের ক্রস ক্লিয়ার করে দেন মোহনবাগানের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়। আবার মোহনবাগানের আক্রমণ, পর পর দু’ বার। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটন সিলভাকে লক্ষ্য করে বল বাড়ান মহেশ। সবুজ-মেরুন গোলকিপার বিশাল কায়েথ সেটি ফিস্ট করে উড়িয়ে দিতে গিয়ে হাত লাগিয়ে দেন ক্লেটনের বুকে। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ক্লেটন। বিশাল বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ক্লেটনের শট বাঁচিয়ে দেন।

এর পর মোহনবাগান তেড়েফুঁড়ে ওঠে এবং ইস্টবেঙ্গল ক্রমশই গুটিয়ে যায়। ম্যাচের ২৭ মিনিটে প্রথম গোল খায় ইস্টবেঙ্গল। আক্রমণে উঠে এসে মোহনবাগানের জনি কাউকো পাস দেন সাহাল সামাদকে। সেই বল ইস্টবেঙ্গল ক্লিয়ার করলেও তা চলে যায় পেত্রাতোসের কাছে। চলতি বলে নিচু শট নেন পেত্রাতোস। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন গিল সেই শট বাঁচালেও তা ধরে রাখতে পারেননি। ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন জেসন কামিংস।

mohon 1
জয়ের পরে মোহনবাগানের খেলোয়াড়দের উল্লাস। ছবি: সঞ্জয় হাজরা

১০ মিনিট পরে মোহনবাগানের আবার গোল। এ বারেও প্রধান ভূমিকা পেত্রাতোসের। ডান দিক থেকে আক্রমণে উঠে প্রথম পোস্ট লক্ষ্য করে নিচু শট মারেন পেত্রাতোস। বারে লেগে সেই শট ফেরত আসে তাঁর কাছেই। ফিরতি বলে আবার শট নেন পেত্রাতোস। সেই বল চলে যায় বাঁ দিকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা লিস্টনের পায়ে। তিনি হালকা টাচে ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়িয়ে দিতে কোনো ভুলচুক করেননি।

মোহনবাগানের তৃতীয় গোলটি আসে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে। ইস্টবেঙ্গলের বক্সে লিস্টন কোলাসোকে ফেলে দেন নন্দকুমার। রেফারি পেনাল্টি দিতে ইতস্তত করেননি। আর এ বার নিজেই নায়ক হন পেত্রাতোস। পেনাল্টি থেকে গোল করে প্রভসুখনকে পরাস্ত করেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা খেলা দেখাল ইস্টবেঙ্গল

প্রথমার্ধেই তিন গোল। পাঁচ গোল খাওয়ার আতঙ্ক তখন গ্রাস করেছে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের। কিন্তু সেই ইস্টবেঙ্গল যে ঘুরে দাঁড়াবে তা ভাবতে পারেননি। দলে দুটো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করা হয়। অজয় ছেত্রীর জায়গায় পি ভি বিষ্ণু এবং লালচুংনুঙ্গার জায়গায় সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নামাতেই খেলার রঙ বদলায়।

এই অর্ধেও অবশ্য মোহনবাগানই প্রথম আক্রমণে উঠে আসে। ম্যাচের ৪৮ মিনিটেই ইস্টবেঙ্গলের গোল লক্ষ্য করে দুর্দান্ত শট নেন জেসন কামিংস। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে তা বাঁচিয়ে দেন।

৫ মিনিট পরেই গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। বাঁ দিক থেকে উঠে আসা ক্লেটনের পাস বুক দিয়ে রিসিভ করেন সাউল ক্রেসপো। তার পর চলতি বলেই বাঁ পায়ে শট নেন। মোহনবাগানের গোলকিপার বিশালকে নীরব দর্শক করে বল গোলে ঢুকে যায়। এর পর ম্যাচের প্রায় ২৫ মিনিট আধিপত্য থাকে ইস্টবেঙ্গলের। বার বার গোল করার সুযোগ সৃষ্টি করে তারা। কিন্তু লাভ হয়নি।

৮০ মিনিটের পরে মোহনবাগান আবার আক্রমণ শানায়। বারদুয়েক গোল করার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু জয়ের ব্যবধান আর তারা বাড়াতে পারেনি।

আরও পড়ুন

প্রস্তুতি প্রায় শেষ! লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট কবে প্রকাশ করবে কমিশন

বাংলার ৪২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল তৃণমূল, রইল পূর্ণাঙ্গ তালিকা

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version