Home খেলাধুলো ফুটবল আইএসএল: পিছিয়ে থেকে জিতল মোহনবাগান, জামশেদপুরকে হারিয়ে টানা চার ম্যাচে জয়  

আইএসএল: পিছিয়ে থেকে জিতল মোহনবাগান, জামশেদপুরকে হারিয়ে টানা চার ম্যাচে জয়  

0
জয়ের পরে মোহনবাগান। ছবি ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ফেসবুক থেকে নেওয়া।

মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট: ৩ (আরমান্দো সদিকু, লিস্টন কলাসো, কিয়ান নাসিরি) জামশেদপুর এফসি: ২ (মোহম্মদ সনন, স্টিভ আম্ব্রি)

জামশেদপুর: আইএসএল-এর ইতিহাসে এই প্রথম। টানা চারটি ম্যাচ জিতল কোনো দল। বুধবার ইস্পাতনগরী জামশেদপুরের জেআরডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আয়োজিত ম্যাচে জামশেদপুর এফসি-কে ৩-২ গোলে হারিয়ে দিল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট।

ম্যাচের ২৯ মিনিট পর্যন্ত এক গোলে পিছিয়ে থেকে জয় পায় গত বারের চ্যাম্পিয়ন। ৪টি ম্যাচ থেকে ৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে লিগ টেবিলের শীর্ষে চলে গেল সবুজ-মেরুন বাহিনী।   

তবে জামশেদপুরেরও দুর্ভাগ্য। ম্যাচের শেষ ৩০ মিনিট ১০ জনে খেলেও মোহনবাগানের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে ফেলেছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত লড়াই করেও আর সমতা ফেরাল পারল না। ৬টি ম্যাচের মধ্যে এটি ছিল তাদের তিন নম্বর হার। ২টি জিতে এবং ১টি ম্যাচ ড্র করে তাদের সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। আপাতত তারা লিগ টেবিলে ৮ নম্বর স্থানে রইল।

প্রথমার্ধে ১-১             

মোহনবাগানে এ দিন খেলেনি ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি, মিডফিল্ডার হুগো বুমৌস ও স্ট্রাইকার জেসন কামিংস। তাঁদের জায়গায় মাঠে নামেন হেক্টর ইউস্তে, গ্ল্যান মার্টিন্স ও আরমান্দো সাদিকু। খাতায় কলমে তারকাহীন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলাটা ভালোই শুরু করে জামশেদপুর। ১৯ বছর বয়সি ফরোয়ার্ড সনন খানের গোলে ম্যাচের ৬ মিনিটেই এগিয়ে যায় জামশেদপুর। মোহনবাগানের শুভাশিস বোস বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে সননের পায়ে বল দিয়ে দেন। ও দিকে একেবারে বক্সের বাইরে বেরিয়ে আসেন গোলকিপার বিশাল কায়েথ। এই সুযোগে সনন বল নিয়ে বক্সে ঢুকে কোণাকুনি শটে ফাঁকা গোলে বল ঠেলে দেন।

এই গোলের পরে ম্যাচের ১৫ মিনিটে সননের গোলমুখী ভলি মোহনবাগানের ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। মোহনবাগানও মাঝে মাঝে প্রতি-আক্রমণে উঠে আসে। ১৯ মিনিটের মাথায় লিস্টন কোলাসোর দূরপাল্লার শট দুর্দান্ত বাঁচিয়ে দেন টিপি রেহনেশ।

এর দশ মিনিট পরেই ম্যাচের ২৯ মিনিটে সমতা ফেরান আরমান্দো সাদিকু।  প্রতি-আক্রমণ থেকেই গোল করেন তিনি। মাঝমাঠ থেকে ডান উইংয়ে বল বাড়ান সহাল আব্দুল সামাদ। মনবীর সিং সেই বল ধরে কিছুটা উঠে গিয়ে বক্সের মধ্যে ক্রস বাড়ান সাদিকুকে। পায়ের টোকায় জামশেদপুরের জালে বল জড়াতে কোনো ভুলচুক করেননি আলবানিয়ার ফুটবল তারকা। প্রথমার্ধে খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকে।

দ্বিতীয়ার্ধে আরও ৩ গোল

বিরতির পরে দুই দলই সমানে সমানে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে। এবং তিন মিনিটের মাথাতেই গোল আসে। মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসো তাঁর ট্রেড মার্ক শট দিয়ে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন। বাঁ দিক দিয়ে বক্সের মাথা থেকে শট নিয়ে গোলের বাঁ দিকের নীচ দিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-১ গোলে।

প্রথমেই এক গোল দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পর দু’ গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে ফের সমতা আনার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে জামশেদপুর। কিন্তু ম্যাচের ৬৮ মিনিটের মাথায় তাদের গোলরক্ষক টিপি রেহনেশ বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসে গোলমুখী সহালের পায়ে সজোরে আঘাত করেন। কিন্তু ততক্ষণে সহালের পা থেকে ছিটকে আসা বল জামশেদপুরের জালে জড়িয়ে দেন সাদিকু। কিন্তু তার আগেই সহালকে মারাত্মক ভাবে রেহনেশ বাধা দেওয়ার জন্য ফ্রি কিকের বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। ফলে মোহনবাগানের সেই গোলও বাতিল হয়ে যায়। রেহেনেশকে লাল কার্ডও দেখানো হয়। যার ফলে অতিরিক্ত সময় ধরে ম্যাচের শেষ ৩০ মিনিট ১০ জনে খেলতে বাধ্য হয় জামশেদপুর।

৭৩ মিনিটের মাথায় বাগানের কোচ ফেরান্দো আক্রমণে ধার বাড়াতে গ্ল্যান মার্টিন্সের জায়গায় নামান কিয়ান নাসিরি। একই উদ্দেশ্যে চিমার জায়গায় গিনির ফরোয়ার্ড স্টিভ আম্বরিকে নামায় জামশেদপুর। ৮০ মিনিটের মাথায় কিয়ান নাসিরির গোলে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় মোহনবাগান এসজি। মাঝমাঠ থেকে পাওয়া বল নিয়ে প্রবল গতিতে কিয়ান বক্সে ঢুকে পড়েন। গোল থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে বাধা দেন পরিবর্ত গোলকিপার বিশাল যাদব। তাঁর গায়ে লেগেই বল উড়ে গিয়ে ঢুকে পড়ে গোলে। সবুজ-মেরুন বাহিনী ৩-১ গোলে এগিয়ে যায়। 

কিন্তু ম্যাচের ৮৬ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে আর-একটি গোল করে জামশেদপুর। পেনাল্টি থেকে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন আম্বরি। হেক্টর ইউস্তে গোলমুখী নিখিল বারলাকে বক্সের মাথায় অবৈধ ভাবে বাধা দেওয়ায় রেফারি পেনাল্টি দেন জামশেদপুরকে। গোলকিপারের বাঁ দিক দিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন আম্বরি। এই গোলের পরেই ফের সমতা আনার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইস্পাতনগরীর দল। নানা ভাবে আক্রমণ শানাতে থাকে তারা। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। মোহনবাগান শেষ পর্যন্ত জিতে যায় ৩-২ গোলে।  

আইএসএলে পিছিয়ে থেকেও ম্যাচ জেতার ঘটনা মোহনবাগানের শেষ বার ঘটেছিল এ বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি, কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচেও এক গোলে পিছিয়ে থেকে ২-১-এ জিতেছিল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। তবে জামশেদপুরও দারুণ লড়েছে, বিশেষ করে তাদের গোলকিপার টিপি রেহনেশ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর শেষ ৩০ মিনিট। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।   

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version