Home খেলাধুলো ফুটবল এএফসি কাপ: ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করে কামিংস-এর জোড়া গোল, মালদ্বীপের মাজিয়াকে হারাল মোহনবাগান

এএফসি কাপ: ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করে কামিংস-এর জোড়া গোল, মালদ্বীপের মাজিয়াকে হারাল মোহনবাগান

0
আক্রমণাত্মক কামিংস।

মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট: ২ (জেসন কামিংস) মাজিয়া এস অ্যান্ড আরসি: ১ (তোমোকি ওয়াড়া)

কলকাতা: প্রথম ম্যাচে ওড়িশা এফসিকে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের মাজিয়াকে হারাল মোহনবাগান। ২০২৩-২৪ এএফসি কাপের গ্রুপ ডি-তে আপাতত শীর্ষে তারা।

সোমবার সল্ট লেকের বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবকে ২-১ গোলে হারাল। দুটি গোলই করেন অস্ট্রেলীয় ফুটবলার জেসন কামিংস। মোহনবাগান এর আগের ম্যাচে ওড়িশা এফসিকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল।

এ দিন এটি মাজিয়ারও দ্বিতীয় ম্যাচ ছিল। প্রথম ম্যাচে তারা বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসকে ৩-১ গোলে হারায়। এ দিকে সোমবার আর-একটি ম্যাচে বসুন্ধরা ৩-২ গোলে হারায় ওড়িশা এফসিকে।

২৮ মিনিটে মোহনবাগানের প্রথম গোল

এ দিন মোহনবাগানের প্রথম গোল পেতে পেতে প্রথমার্ধের ২৮ মিনিট কেটে যায়। ম্যাচের শুরু থেকেই মোহনবাগান আক্রমণে শান দেয়। কিন্তু মাজিয়া কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রতি-আক্রমণে উঠে আসে। প্রাথমিক চাপ কাটিয়ে উঠে মোহনবাগানও আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১৩ মিনিটে দিমিত্রি পেত্রাতোস কর্নার কিক থেকে জেসন কামিংস-এর উদ্দেশে বল দেন। কামিংস হেড করে মাজিয়ার জালে বল জড়ানোর চেষ্টা করেন। মাজিয়ার গোলকিপার হুসেন শরিফ প্রথমে বলটা ধরতে পারেননি কিন্তু কিছু বিপদ ঘটার আগেই বল ধরে ফেলেন।

দু’ পক্ষে আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের খেলা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত গোল পেয়ে যায় সবুজ-মেরুন বাহিনী। বল নিয়ে দৌড়োতে দৌড়োতে হুগো বুমৌস পাস করেন কামিংসকে। কামিংস মাজিয়ার বক্সের ঠিক বাইরে থেকে শট নেন। নিচু বল শরিফের নাগাল এড়িয়ে ঢুকে যায় মাজিয়ার গোলে। মোহনবাগান এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।

কামিংস-এর গোল।

কায়দা করে পেনাল্টি মিস কামিংস-এর

ম্যাচের ৪০ মিনিটে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। মাজিয়ার রক্ষণের খেলোয়াড় বক্সের মধ্যে মোহনবাগানের আরমান্দো সদিকুকে ফেলে দেন। পেনাল্টি কিক নিতে আসেন কামিংস। তখন তাঁর মাথায় বোধহয় ২০১৬ সালে লা লিগার একটি ম্যাচের কথা ঘুরছিল। সেই ম্যাচে সেলতা ভিগোর বিরুদ্ধে পেনাল্টি পেয়ে মেসি এবং সুয়ারেজ কায়দা করে গোল করেছিলেন। মেসি পেনাল্টি স্পট থেকে সুয়ারেজকে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সুয়ারেজ সেটি গোলে ঠেলে দেন।

কিন্তু যা মেসি-সুয়ারেজ পারবেন তা সবাই পারবেন এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। কিন্তু পারবেন ভেবেই পেনাল্টি স্পট থেকে কামিংস বল বাড়িয়ে দেন পেত্রাতোসকে। কিন্তু পেত্রাতোস বল ধরার আগেই বিপক্ষের আন্টিক বল ধরে দলকে দ্বিতীয় গোল থেকে বাঁচান।

ম্যাচের ৪৫ মিনিটেই গোল শোধ করে মাজিয়া। মোহনবাগানের বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়ে যান তোমোকি ওয়াড়া। দুর্দান্ত শটে তিনি পরাস্ত করেন মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল কাইথকে। তখন নিশ্চয় পেনাল্টি থেকে গোল না করার ব্যাপারটি নিয়ে আপশোশ করছিলেন কামিংস।

খেলা শেষে। দু’ হাত মেলে কামিংস।

অতিরিক্ত সময়ে কামিংস-এর জয়সূচক গোল

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ শুরু হওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যেই মোহনবাগানকে গোল পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেন মাজিয়ার গোলকিপার শরিফ। প্রথমে পেত্রাতোসের শট বাঁচান শরিফ। বল রিবাউন্ড করে চলে যায় কামিংস-এর কাছে। কামিংস গোল লক্ষ্য করে শট নেন। কিন্তু শরিফ আবার বাঁচিয়ে দেন।

৪ মিনিটের মধ্যেই আবার সুযোগ। এ বার গোল লক্ষ্য করে কোলাসোর শট। এ বারও ত্রাতা শরিফ। ৪ মিনিট পরে সবাইকে চমকে দেন আরমান্দো সদিকু। বহু বহু দূর থেকে শট নেন মাজিয়ার গোল লক্ষ্য করে। এ বারেও বাঁচিয়ে দেন শরিফ। এ ভাবেই মোহনবাগানের আক্রমণ চলতে থাকে। কিন্তু জয়সূচক গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ের ২ মিনিট পর্যন্ত। ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করলেন কামিংস। সহল দুর্দান্ত পাস দেন কামিংসকে। বক্সের মধ্যে কিছুটা দৌড়ে যান কামিংস। সামনে শুধু শরিফ। শরিফকে কাটিয়ে বল ঠেলে দেন গোলে। এর পরেও ৫ মিনিট খেলা চলে। শেষ পর্যন্ত মোহনবাগান ২-১ গোলে জেতে।

ছবি: সঞ্জয় হাজরা

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version