Home জন্মজয়ন্তী ঘুরে আসুন কার্শিয়াংয়ের নেতাজি মিউজিয়াম

ঘুরে আসুন কার্শিয়াংয়ের নেতাজি মিউজিয়াম

0

শ্রয়ণ সেন

কার্শিয়াংয়ের গিদ্দাপাহাড়ে এই বাড়িটি যেন এক তীর্থক্ষেত্র। ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৫, এই বাড়িতেই ব্রিটিশ সরকারের হাতে গৃহবন্দি ছিলেন শরৎ বসু। পরের বছরেই নেতাজির পালা। এই বাড়িতে তাঁকে সাত মাস বন্দি করে রাখা হয়।

এটি এখন নেতাজি মিউজিয়াম। নেতাজির বহু বিরল ছবি, তাঁর ব্যবহৃত আসবাবপত্র আর তাঁর লেখা নানা চিঠি এখানে সযত্নে রাখা আছে। ১৯২২ সালে রলি ওয়ার্ড-এর কাছ থেকে এই বাড়িটি কেনেন নেতাজির দাদা শরৎচন্দ্র বসু।

১৯৩৭-এর অক্টোবরে দ্বিতীয় বার এখানে আসেন নেতাজি। হরিপুরা কংগ্রেসের ভাষণ এই বাড়িতে বসেই লিখেছিলেন নেতাজি। এখান থেকেই গান্ধীজি ও নেহরুকে চিঠিও লেখেন।

এই বাড়িতে থাকাকালীনই রবীন্দ্রনাথের একটি চিঠি পেয়েছিলেন নেতাজি। তাতে ‘বন্দে মাতরম’ গানের প্রসঙ্গও ছিল। চিঠির একটি অংশে রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, “…যে রাষ্ট্রসভা ভারতবর্ষের সকল ধর্ম-সম্প্রদায়ের মিলনক্ষেত্র, সেখানে এই গান সর্বজনীন ভাবে সঙ্গত হতেই পারে না।” রবীন্দ্রনাথের প্রস্তাব ছিল, ‘বন্দে মাতরম’-এর জায়গায় ‘বন্দে ভ্রাতরম’ স্লোগান গ্রহণ করা হোক।

ওই চিঠির উত্তরও রবীন্দ্রনাথকে দিয়েছিলেন নেতাজি। কিন্তু তাঁর সেই জবাবের হাতের লেখা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

কার্শিয়াংয়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে নেতাজি কত একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন, তার নিদর্শনস্বরূপ বহু চিঠিও রয়েছে এখানে। নেতাজিকে নিয়ে এমন দুর্লভ ছবির সম্ভার ভারতে আর কোথাও আছে বলে মনে করতে পারি না।

নেতাজি এখানে থাকাকালীন প্রাতর্ভ্রমণে বেরোতেন। পাগলাঝোরায় প্রাতর্ভ্রমণরত নেতাজি, এমনই একটি ছবি রয়েছে। বসু পরিবারের অন্যদের সঙ্গে নেতাজির ছবি যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে নেহরু, সর্দার পটেলের সঙ্গে তোলা ছবিও।

১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাড়িটি বসু পরিবারের অধীনে ছিল। এর পর বাড়িটি তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার অধিগ্রহণ করে। সংস্কার করে তা কলকাতার ‘নেতাজি ইনস্টিটিউট ফর এশিয়ান স্টাডিজ’-এর হাতে তুলে দেয়।

নেতাজির দুর্লভ ছবি, চিঠিপত্র আর ব্যবহৃত আসবাবপত্র নিয়ে এই সংগ্রহশালাটি উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালে। ২০১৮ সালে সেই সংগ্রহশালার সংস্কারের কাজও হয়েছে।

কার্শিয়াংয়ের ‘পয়েন্টস’ ভ্রমণের মধ্যেই নেতাজির এই বাড়িও পড়ে। কিন্তু তাতে মন ভরবে না। এখানে আসতে হবে আলাদা ভাবে। অনেক সময় দিয়ে ভালো করে দেখতে হবে। তবেই মনের শান্তি পাওয়া যাবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version