Home শিল্প-বাণিজ্য বিএসএনএল-এর আর্থিক সঙ্কট নিয়ে ম্যানেজমেন্টকে কাঠগড়ায় তুলছে কর্মী সংগঠন, দ্বিতীয় স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের...

বিএসএনএল-এর আর্থিক সঙ্কট নিয়ে ম্যানেজমেন্টকে কাঠগড়ায় তুলছে কর্মী সংগঠন, দ্বিতীয় স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের বিরোধিতা

0

সরকারি টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল-এর আর্থিক সঙ্কটের জন্য ম্যানেজমেন্ট এবং ভুল নীতিগুলিকে কাঠগড়ায় তুলছে সংস্থার কর্মী সংগঠন বিএসএনএলইইউ। রাজস্ব বাড়ানোর কাজে ব্যর্থতার জন্য ম্যানেজমেন্টকে দোষারোপ করেছে এবং দ্বিতীয়বার স্বেচ্ছাবসর (ভিআরএস) প্রকল্প আনার সিদ্ধান্তকে বাতিল করার দাবি জানিয়েছে কর্মীসংগঠন।

খবরে জানা গেছে, বিএসএনএল-এর ম্যানেজমেন্ট ৩৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে দ্বিতীয় স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের মাধ্যমে। ২০২০ সালে প্রথম স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পে ৮০,০০০ কর্মী স্বেচ্ছাবসর নিয়েছিলেন, যা প্রাথমিক লক্ষ্য ৩০,০০০–৩৫,০০০-এর দ্বিগুণের বেশি।

বিএসএনএলইইউ-র সাধারণ সম্পাদক পি অভিমন্যু সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেন, “বিএসএনএল-এর আর্থিক সমস্যার কারণ কর্মীর সংখ্যা নয়, বরং ম্যানেজমেন্টের রাজস্ব বাড়ানোর অক্ষমতা। আমরা দ্বিতীয় স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”

বিএসএনএল-এ বর্তমানে ২৯,৭৫০ জন আধিকারিক এবং ২৬,৪৩৫ জন কর্মচারী রয়েছেন। বিএসএনএলইইউ জানায়, নীতিগত ত্রুটি এবং ম্যানেজমেন্টের ব্যর্থতা বিএসএনএল-এর পুনরুজ্জীবনের প্রধান বাধা। তারা উদাহরণ হিসেবে এমটিএনএল-এর কথা উল্লেখ করে বলে, বারবার স্বেচ্ছাবসর চালু করেও এমটিএনএল-কে আর্থিক সঙ্কট থেকে বাঁচানো যায়নি।

বিএসএনএল তাদের আয়ের ৩৮ শতাংশ কর্মীদের বেতনে খরচ করে, যেখানে বেসরকারি সংস্থা জিও এবং এয়ারটেল এই খাতে এক অঙ্কের শতাংশ খরচ করে। বিএসএনএলইইউ জানিয়েছে, বেসরকারি সংস্থাগুলি অনেক বেশি আয় করে, তাই তাদের বেতনের খরচ তুলনামূলকভাবে কম।

বিএসএনএল ২০১৯, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ পেলেও রাজস্ব বাড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। যেখানে জিও এবং এয়ারটেল সারা দেশে ফাইভ-জি পরিষেবা চালু করেছে, সেখানে বিএসএনএল এখনও পুরনো টু-জি ও থ্রি-জি পরিষেবার উপর নির্ভর করছে।

ফোর-জি সরঞ্জাম স্থাপনে দেরির কারণে বিএসএনএল গ্রাহক হারিয়েছে এবং আয়ের ক্ষতি হয়েছে। টিসিএস সরবরাহ করা ফোর-জি সরঞ্জামের গুণমান নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। বিএসএনএল-এর কর্মী সংগঠন জানিয়েছে, “যেখানে ফোর-জি ইনস্টল হয়েছে, সেখানেও খারাপ ভয়েস এবং ডেটা পরিষেবা চলছে।”

বিএসএনএল-কে আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের কাছ থেকে ফোর-জি সরঞ্জাম কেনার অনুমতি না দিয়ে শুধু দেশীয় সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কেনার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। কর্মী সংগঠনগুলি বলেছে, এতে বিএসএনএল প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।

এআইজিইটিওএ-ও দ্বিতীয় স্বেচ্ছাবসর বিরোধিতা করেছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাভিল শিল ভার্মা বলেন, “পরিকল্পনার আগে কর্মীদের বেতন, পেনশন, পদোন্নতি এবং অন্যান্য দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করা উচিত।”

ভার্মা আরও জানান, যদি কর্মীরা এখন স্বেচ্ছাবসর গ্রহণ করেন, তবে তাঁরা মাত্র ৩,০০০–৪,০০০ টাকা পেনশন পাবেন, যা অত্যন্ত কম। তিনি বলেন, “যথাযথ পেনশন এবং সামাজিক সুরক্ষা ছাড়া স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প বিএসএনএল কর্মীদের প্রতি আরেকটি অবিচার।”

দুই কর্মী সংগঠনই জানায়, বিএসএনএল-এর পুনরুজ্জীবন নিশ্চিত করতে প্রথমে নীতিগত ত্রুটি, অদক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির দেরি দূর করা প্রয়োজন। তারপরে কর্মী সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version