২০২৪ সালের শেষ ট্রেডিং দিনে, ৩১ ডিসেম্বর, শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেল। নিফটি সবুজ সংকেতের ধারেকাছে উঠে আসতে পারলেও সেনসেক্স রয়ে গেল লাল রেখায়। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলোর চাপ সত্ত্বেও ফার্মা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এবং তেল ও গ্যাস সংস্থার শেয়ার বাজারে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয়। তবে, ডলার সূচকের উত্থান এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের (FII) ক্রমাগত বিক্রির ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বজায় অব্যাহত।
সেনসেক্স ও নিফটির পারফরম্যান্স
বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্স ১০৯.১২ পয়েন্ট বা ০.১৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৭৮,১৩৯.০১-এ। অন্যদিকে, একটি তথ্য অনুযায়ী, নিফটি ১৩.২৫ পয়েন্ট বা ০.০৬ শতাংশ বেড়ে পৌঁছায় ২৩,৬৫৮.১৫-এ। মোট ২,২৩৯টি শেয়ারের দাম বাড়ে, ১,৫৭১টি শেয়ার কমে যায় এবং ৯৭টি শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত থাকে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতামত
শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, আজকের লাভ নির্বাচিত শেয়ারের কেনাকাটার মাধ্যমে হয়েছে, তবে তা ধরে রাখা সম্ভব কিনা সন্দেহ। বাজারের তীব্র অস্থিরতা একে কিছুটা বাড়াতে পারে, তবে সামগ্রিক প্রবণতা নেতিবাচক থাকায় দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব সীমিত।
তাঁরা আরও বলছেন, ২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসেও বাজার অস্থির থাকবে। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের নীতি, ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেট এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকের (Q3) আয়—এই তিনটি বিষয় বাজারের গতিপথ নির্ধারণ করবে। কিছু খাতে উন্নতি হলেও তা উল্লেখযোগ্য হবে না। তবে, ব্যবস্থাপনার ইতিবাচক মন্তব্য বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে পারে।
ছোট ও মাঝারি শেয়ারের দৃঢ়তা
ছোট ও মাঝারি শেয়ার ০.৭ শতাংশ এবং ০.১ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। গত তিন মাসে নিফটি প্রায় ৯ শতাংশ পতন হলেও ছোট ও মাঝারি শেয়ারের পতন মাত্র ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল।
২০২৪ সালের বাজারের সাফল্য
২০২৪ সাল ছিল শেয়ারবাজারের ধারাবাহিক নবম বৃদ্ধির বছর। নিফটি এবং সেনসেক্স যথাক্রমে প্রায় ৯ শতাংশ এবং ৮ শতাংশ বেড়ে বাজারে শক্তিশালী সমাপ্তি আনতে সক্ষম হয়। নিফটি মিডক্যাপ ও স্মলক্যাপ সূচক উভয়ই ২০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়, ছোট শেয়ারগুলিও স্থিতিশীলতা এবং সম্ভাবনা রেখে গিয়েছে।
শক্তিশালী ও দুর্বল খাত
ফার্মা এবং রিয়েল এস্টেট খাত যথাক্রমে ৩৯ শতাংশ এবং ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে শীর্ষে ছিল। স্বাস্থ্য পরিষেবা খাত ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে সেরা পারফর্মার হিসাবে আবির্ভূত হয়। অন্যদিকে, মিডিয়া খাত প্রায় ২৫ শতাংশ পতনের মুখে পড়ে। নিফটি ব্যাংক সূচক মাত্র ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও তথ্যপ্রযুক্তি ও অটোমোবাইল খাত ২০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।