ভারতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের (FPI) শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বাড়লেও একে স্বাভাবিক মুনাফা তোলার প্রক্রিয়া বলেই ব্যাখ্যা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বাজেট-পরবর্তী সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ বিনিয়োগের জন্য অনুকূল। ফলে ভালো রিটার্ন পেয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তোলার সুযোগ নিচ্ছেন।”
এদিকে, ভারতের শেয়ারবাজার টানা আট দিন পতনের পর সোমবার ঘুরে দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাপক বিক্রির ফলে বাজার সংশোধনের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে।
ভারতে বিনিয়োগ থেকে মুনাফা তোলার ধারা
জাতীয় সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরি লিমিটেডের (NSDL) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে মোট ১২০০ কোটি ডলার তুলে নিয়েছেন। যদিও ২০২৪ সালের গোড়ায় তারা ১২কোটি ৪০ লক্ষ ডলার মূল্যের শেয়ার কিনেছিলেন।
মিন্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার মাসে ২১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শেয়ার বিক্রি হলেও, এটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট সম্পদের মাত্র ১৪.২%। বাকি ক্ষতির কারণ মূলত তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা বিনিয়োগের অবমূল্যায়ন।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি ও ভারতের প্রতিক্রিয়া
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ‘পারস্পরিক শুল্ক‘ চালুর পরিকল্পনা করেছেন, যেখানে আমেরিকার উপর যে দেশ বেশি শুল্ক আরোপ করবে, সেই দেশের পণ্য আমদানিতেও সমান শুল্ক বসবে।
এ প্রসঙ্গে ভারতীয় রাজস্ব সচিব তুহিন কান্ত পাণ্ডে বলেন, “বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শুধু একটি উদীয়মান বাজার থেকে অন্যটিতে যাচ্ছেন না, বরং তারা অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন।”
নির্মলা সীতারামনও জানান, “ভারত বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলছে, তাই শুল্ক হ্রাস ও যুক্তিযুক্ত করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে।”
ভারতের শেয়ারবাজার ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
● Nifty 50 ও Sensex সাম্প্রতিক পতন কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
● MSCI India Index-এর বার্ষিক রিটার্ন 5.88%, যা MSCI Emerging Markets Index-এর 15.35% রিটার্নের তুলনায় অনেক কম।
● তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর দুর্বল আয়ও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় বাজার হয়ে থাকবে।