দীপাবলির আগেই দেশে আসতে চলেছে পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে যে “নেক্সট জেনারেশন” সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার সকালে সেই পরিকল্পনার তিন স্তম্ভভিত্তিক খসড়া প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। প্রস্তাবটি ইতিমধ্যেই রাজ্য মন্ত্রীদের গোষ্ঠীর (GoM) কাছে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী জিএসটি কাউন্সিল বৈঠকে তা আলোচনায় আসবে।
‘ডাবল দীপাবলি’ প্রতিশ্রুতি
মোদীর ভাষণে জিএসটি সংস্কারকে “দীপাবলির উপহার” বলে উল্লেখ করা হয়। ২০১৭ সালের ১ জুলাই চালু হওয়া এই কর ব্যবস্থার আট বছর পূর্তিতে এবার সময় এসেছে পুনর্বিবেচনার, বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উচ্চস্তরের একটি কমিটি গঠন করে রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা সেরে কেন্দ্র নতুন সংস্কার পরিকল্পনা এনেছে।
সংস্কারের তিন স্তম্ভ
১. স্ট্রাকচারাল রিফর্মস (Structural Reforms) – নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচারের সংশোধন, শ্রেণিবিন্যাস সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান, স্থিতিশীল ও পূর্বানুমেয় করব্যবস্থা গড়ে তোলা।
২. রেট র্যাশনালাইজেশন (Rate Rationalisation) – নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং কিছু ‘আকাঙ্ক্ষিত পণ্য’-তে কর হ্রাস, করহার স্থিতিশীল রাখা, কর স্ল্যাব কমিয়ে আনা।
৩. ইজ অব লিভিং (Ease of Living) – স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য নিবন্ধন সহজীকরণ, প্রি-ফিল্ড রিটার্ন, দ্রুত রিফান্ড প্রক্রিয়া।
সাধারণ মানুষের লাভ
অর্থ মন্ত্রকের দাবি, এই পদক্ষেপগুলি সাধারণ মানুষের করের বোঝা কমাবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সস্তা করবে, এমএসএমই বা ক্ষুদ্র সংস্থার ক্ষেত্রে গতি আনবে এবং অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে। ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচার সংশোধনের ফলে ইনপুট ও আউটপুট ট্যাক্সের ভারসাম্য তৈরি হবে,কর সংক্রান্ত বিরোধ কমবে এবং উৎপাদনে দেশীয় মূল্য সংযোজন বাড়বে।
করহার সরলীকরণের মাধ্যমে সাশ্রয়ী হবে পণ্যের দাম, বৃদ্ধি পাবে চাহিদা। সরকারের লক্ষ্য একটি সহজ করব্যবস্থা গঠন, যেখানে মূলত দুইটি স্ল্যাব থাকবে—স্ট্যান্ডার্ড ও মেরিট, এবং বিশেষ হার কেবল কিছু নির্বাচিত পণ্যের জন্য।
ব্যবসা সহজীকরণ
স্টার্টআপ ও ক্ষুদ্র ব্যবসার নিবন্ধন প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে, প্রি-ফিল্ড রিটার্নের মাধ্যমে ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপ কমবে। রপ্তানিকারক ও ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচারভুক্তদের জন্য রিফান্ড প্রক্রিয়া হবে দ্রুত ও স্বয়ংক্রিয়।
সরকার জানিয়েছে, দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে। জিএসটি-কে একটি সহজ, স্থিতিশীল ও স্বচ্ছ করব্যবস্থায় রূপান্তর করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে কেন্দ্র।