ভারতের দুই শীর্ষ ধনী মুকেশ অম্বানি এবং গৌতম আদানি শেষ কয়েক মাসে নিজেদের নিট সম্পদে উল্লেখযোগ্য পতনের সম্মুখীন হয়েছেন। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সের (BBI) তথ্য অনুযায়ী, অম্বানির সম্পদ ১২০৮০ কোটি ডলার থেকে কমে ৯৬৭০ কোটি ডলারে এবং আদানির সম্পদ ১২২৩০ কোটি ডলার থেকে ৮২১০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মূল ব্যবসাগুলো, বিশেষত জ্বালানি এবং খুচরো বিক্রয়ের ক্ষেত্রে দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে মুকেশ অম্বানির সম্পদ হ্রাস পেয়েছে। তেলের চাহিদা কমা, চিনা রফতানির প্রতিযোগিতা এবং খুচরো ক্রেতাদের ব্যয়ের মন্থরতা কোম্পানির স্টক পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া ঋণ বৃদ্ধির বিষয়েও বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ রয়েছে। এখন রিলায়েন্স ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, পুনর্নবীকরণ যোগ্য জ্বালানি এবং খুচরো ব্র্যান্ডের দিকে মনোনিবেশ করছে। ডিজনি এবং এনভিডিয়ার সঙ্গে অংশীদারিত্ব কোম্পানির প্রযুক্তিগত উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করেছে।
অন্য দিকে, আরেক শিল্পপতি গৌতম আদানি হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্ট এবং মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের তদন্তের মতো বেশ কিছু সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার তার জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদানি নিজে বলেছেন, “প্রতিটি চ্যালেঞ্জ আমাদের আরও শক্তিশালী করে তোলে।”
২০২৪ সালে ভারতের শীর্ষ ২০ ধনী ব্যক্তি সম্মিলিতভাবে নিজেদের নিট সম্পদে আরও ৬৭৩০ কোটি ডলার যোগ করেছেন। শিব নাদর এবং সাবিত্রী জিন্দল সবচেয়ে বেশি লাভ করেছেন। যদিও মুকেশ অম্বানি এবং গৌতম আদানি তাঁদের অবস্থান হারিয়েছেন। তবে, সব মিলিয়ে ভারতের ধনী পরিবারগুলো এখনও বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে উজ্জ্বল।
ওয়াকবিহাল মহলের মতে, ইলন মাস্কের স্টারলিঙ্ক ভারতের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড বাজারে প্রবেশ করলে রিলায়েন্স জিওর ওপর প্রভাব পড়তে পারে। একই সঙ্গে বিশ্ব রাজনীতি, বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন ভারতীয় ব্যবসার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। মুকেশ অম্বানি এবং গৌতম আদানি এখনও ভারতের অর্থনীতিতে তাঁদের বিশাল প্রভাব ধরে রেখেছেন ঠিকই। তবে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাঁদের কৌশলই ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণ করবে।
আরও পড়ুন: বিটকয়েনের নতুন রেকর্ড, ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থনে ক্রিপ্টো মার্কেটে উচ্ছ্বাস