নয়াদিল্লি: মঙ্গলবার লোকসভায় ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল পেশ করবেন আইনমন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল। এর আগে, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) এই বিল পেশ করার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ২০ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা, ফলে বিলটি পেশ করার জন্য সরকারের হাতে আর মাত্র চার দিন রয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিলে অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। শাসক দল বিজেপি একে “ঐতিহাসিক” বলে অভিহিত করেছে এবং দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ প্রশাসনিক ভাবে সুবিধাজনক ও ব্যয়সাশ্রয়ী হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বহুবার এই ধারণার প্রশংসা করেছেন এবং একে সময়ের প্রয়োজন বলে বর্ণনা করেছেন।
বিলের বর্তমান অনুমোদন অনুযায়ী, লোকসভা এবং বিধানসভাগুলির নির্বাচন একযোগে করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে, পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের কমিটির সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও সেগুলি আপাতত এই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
বিরোধী দলগুলি, বিশেষত তৃণমূল কংগ্রেস, এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, এটি দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে বিঘ্ন ঘটাতে পারে, আঞ্চলিক দলগুলির গুরুত্ব কমিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।
‘এক দেশ, এক ভোট’ ধারণাটি নতুন নয়। ১৯৫০ সালে সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর ১৯৫২, ১৯৫৭, ১৯৬২ এবং ১৯৬৭ সালে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের জন্য একযোগে ভোট হয়েছিল। তবে ১৯৬৮-৬৯ সালের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার পর থেকে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
যদি সংসদের উভয় কক্ষে বিলটি পাস হয়, তবে এটি কার্যকর হলে দেশ জুড়ে নির্বাচনের সময় ও খরচ কমাতে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। তাদের যুক্তি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হয়, তা কমে যাবে। ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না এবং তার সঙ্গে সরকারি কর্মীদের উপর থেকেও ভোটার তালিকা তৈরি ও ভোট সংক্রান্ত নানা কাজকর্মের চাপ কমবে।
আরও পড়ুন: মুকেশ অম্বানি এবং গৌতম আদানির সম্পদ কমেছে! ১০,০০০ কোটি ডলারের ক্লাব থেকে প্রস্থান