বৃহস্পতিবার সেনসেক্স টানা সপ্তম দিনের জন্য পতন অব্যাহত রেখেছে, যা গত নভেম্বরের পর থেকে দীর্ঘতম পতনের ধারা। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা, আয়ের মন্দা এবং বিদেশি বিনিয়োগের ধারাবাহিক বহিঃপ্রবাহ বাজারের মনোভাবকে প্রভাবিত করেছে।
সেনসেক্স এবং নিফটি ৫০ উভয়ই দিনের শুরুতে অস্থিরতা দেখালেও শেষ পর্যন্ত সামান্য লোকসান করে দিন শেষ করে। গত ছয় দিনে এই সূচকগুলি প্রায় ৩ শতাংশ নীচে নেমেছে। বিনিয়োগকারীরা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং দেশীয় কর্পোরেট আয়ের মন্দা নিয়ে সতর্ক রয়েছেন।
বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব ও বাজারের মনোভাব
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে শীঘ্রই আমদানি শুল্ক আরোপকারী দেশগুলোর উপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হোয়াইট হাউস সফরের আগে এই ঘোষণা বাজারে অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়েছে। আলোচনার মূল বিষয় হতে পারে কমপক্ষে এক ডজন ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা।
বাজারের প্রধান সূচকগুলির অবস্থা
বৃহস্পতিবার লেনদেনে লার্জ ক্যাপের শেয়ারগুলিতে বিক্রির চাপ দেখা গেলেও মিডক্যাপগুলি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। নিফটি মিডক্যাপ সূচক ১২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫০,৮১৬-এ বন্ধ হয়েছে। সেনসেক্স পাঁচশো পয়েন্টেরও বেশি উঠে শেষমেশ ৩২ পয়েন্ট হারিয়ে ৭৬,১৩৮-এ বন্ধ হয়। অন্য দিকে, নিফটি ফিফটি ১৩.৮৫ পয়েন্ট হারিয়ে থিতু হয় ২৩,০৩১-এ।
ব্যাংকিং ও অটো স্টকগুলির পতন
নিফটি ব্যাংক সূচক ১২০ পয়েন্ট কমে ৪৯,৩৬০-এ নেমে এসেছে। এর বিশেষ কারণ ব্যাংকিং স্টকগুলির দুর্বলতা। অটো স্টকগুলি দিনের শুরুতে লাভ করলেও লেনদেনের শেষ দিকে সেই গতি হারায়। হিরো মটোকর্প ও আইচার মোটরস তাদের উচ্চতম স্তর থেকে ২ শতাংশ কমেছে।
আদানি গ্রুপ ও অন্যান্য সংস্থার শেয়ার পতন
আদানি গ্রুপের শেয়ারগুলিতে প্রবল বিক্রির চাপ ছিল। আদানি এন্টারপ্রাইজ এবং আদানি পোর্টস শেষ ঘণ্টায় ২-৫ শতাংশ পর্যন্ত পতন দেখেছে, যা সূচকের আরও পতনে অবদান রেখেছে।
ভারত ফোর্জ প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে, কারণ এর তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আয়ের ফলাফল বাজারের প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল ছিল। একইভাবে, ন্যাটকো ফার্মা তাদের দুর্বল ত্রৈমাসিক ফলাফলের পরে এক ধাক্কায় ২০ শতাংশ পড়ে যায়। যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
সেক্টরভিত্তিক পারফরম্যান্স
বাজারের সামগ্রিক পরিস্থিতি ছিল মিশ্র। অগ্রগতির অনুপাত ও পতনের অনুপাত ছিল ১:১, যা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে ভারসাম্যের ইঙ্গিত দেয়। ফার্মা স্টকগুলি ভালো পারফরম্যান্স দেখালেও অটো, ব্যাংকিং এবং পরিকাঠামো খাতের নির্দিষ্ট কিছু স্টকে বিক্রির চাপ দেখা গেছে।