Home শিল্প-বাণিজ্য হাজার পয়েন্টের বেশি পতন সেনসেক্সে, কী এমন ঘটল

হাজার পয়েন্টের বেশি পতন সেনসেক্সে, কী এমন ঘটল

0

ভারতের শীর্ষস্থানীয় শেয়ারবাজার সূচক সেনসেক্স এবং নিফটি৫০ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিশাল পরিমাণে স্টক বিক্রির চাপে পড়ে গেল! এর ফলে চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনেও তাদের ক্ষতির ধারা অব্যাহত রইল। বিএসই সেনসেক্স ১,১০৯ পয়েন্ট (১.৩৫%) কমে ইন্ট্রা-ডে সর্বনিম্ন ৮০,৬৩৯.৬১ পয়েন্টে পৌঁছেছে, অন্যদিকে এনএসই নিফটি৫০ ৩৪৪.৬৫ পয়েন্ট (১.৪ শতাংশ) কমে ২৪,৩২৩.৬ পয়েন্টে নেমে গেছে।

বাজারের পতনের মূল কারণ রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ইনফোসিস এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের মতো বড় কোম্পানির শেয়ারে বিক্রির চাপ। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের ১৮ ডিসেম্বরের মিটিংয়ের আগে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। তবে, ব্রডার মার্কেট ইনডেক্স যেমন নিফটি মিডক্যাপ এবং নিফটি স্মলক্যাপ মাত্র ০.৬ শতাংশ করে পতনের মুখোমুখি হয়েছে, যা বেঞ্চমার্কের তুলনায় কিছুটা ভাল ফলাফল।

শেয়ারবাজার অন্যতম পতনের কারণ:

১. ফেড মিটিংয়ের আগে উদ্বেগ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪-এ মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি সিদ্ধান্তের আগে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। যদিও ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমানোর আশা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের জন্য ফেডের রেট কাটের পথ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। ফেডের নীতি ঘোষণায় কোনো পরিবর্তন হলে, বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

২. এফআইআই বিক্রির আশঙ্কা: খবর পাওয়া গেছে যে, চিন ২০২৫ সালে তার বাজেট ঘাটতি ৩ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, যা ভারতের শেয়ারবাজারে এফআইআই প্রবাহে চাপ ফেলতে পারে। এই কারণে ‘সেল ইন্ডিয়া, বাই চায়না’ এই প্রবণতা ভারতের শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ সৃষ্টি করছে। যদিও এটি শুধুমাত্র অনুমান। যে কারণে বাজারে পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাও সমান ভাবে রয়েছে।

৩. বাণিজ্য ঘাটতির বৃদ্ধি: নভেম্বরে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ৩৭.৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা রুপির (ভারতীয় মুদ্রা) উপর চাপ ফেলবে এবং এটি ৮৫ টাকা প্রতি ডলারে পৌঁছাতে পারে। রুপির অবমূল্যায়ন তথ্যপ্রযুক্তি এবং ফার্মা রফতানিকারকদের জন্য উপকারী হলেও, আমদানির ব্যয় বৃদ্ধি তাদের শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

৪. দুর্বল বৈশ্বিক বাজার সংকেত: রায়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এশীয় শেয়ারবাজারগুলি অস্থিতিশীল ছিল কারণ ট্রেডাররা এই সপ্তাহে সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলির সিদ্ধান্তের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। অস্ট্রেলিয়ার শেয়ারবাজার ০.৮২ শতাংশ বেড়েছে, তবে জাপানের নিক্কেই ০.১৫ শতাংশ কমেছে। এমএসসিআই এর বৃহত্তম এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সূচক ০.৩ নেমে এসেছে।

৫. প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ: ভিআইএক্স (ভলাটিলিটি ইনডেক্স) বৃদ্ধির ফলে বাজারে সতর্কতার সংকেত মিলেছে, যা পরবর্তী সময়ে আরও পতনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। ২৪,৪৮০-২৪,৪০০ পয়েন্টে টেকনিক্যাল সাপোর্ট লেভেল নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে ২৫,৬০০ পয়েন্টে পুনরুদ্ধারের আশা করা হচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই সব কারণেই মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে বড় পতন ঘটেছে এবং বিনিয়োগকারীরা বৈশ্বিক সংকেত ও দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নজর রাখছেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version