টানা চতুর্থ দিনে বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হল ভারতীয় শেয়ারবাজার। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রায় ১,২০০ পয়েন্ট পতন ঘটিয়ে দিনের শেষে ৯৬৪ পয়েন্ট কমে ৭৯,২১৮.০৫-এ বন্ধ হয় সেনসেক্স। অন্যদিকে, নিফটি ৫০ সূচক ২৪৭ পয়েন্ট কমে ২৩,৯৫১.৭০ স্তরে শেষ হয়।
সামগ্রিক পরিস্থিতি
- সেনসেক্স: ৭৯,০২৯.০৩-এ শুরু হয়ে দিনের সর্বনিম্ন ৭৯,০২০.০৮-এ নামে।
- নিফটি ৫০: ২৩,৮৭৭.১৫-এ শুরু হয়ে সর্বনিম্ন ২৩,৮৭০.৩০ স্তরে নামে।
পতনের প্রধান কারণ:
১. মার্কিন ফেডের প্রভাব:
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৪.২৫-৪.৫০ শতাংশ করলেও ভবিষ্যতে হার কমানোর গতি মন্থর হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। ফলে বাজারে হতাশা তৈরি হয়।
২. বিদেশি মূলধনের বহিঃপ্রবাহ:
বিদেশি প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা (FIIs) টানা তিন দিনে ভারতীয় শেয়ার ৮,০০০ কোটি টাকার বেশি শেয়ার বিক্রি করেছেন।
৩. রুপির রেকর্ড পতন:
বৃহস্পতিবার ভারতীয় রুপি প্রতি ডলারে ৮৫.৩-এ পৌঁছে নতুন নিম্ন স্তর ছুঁয়েছে। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে সরে যাচ্ছেন।
৪. মহামন্দার আশঙ্কা:
নভেম্বরে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড ৩৭.৮৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়াও দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে।
৫. উপার্জন পুনরুদ্ধারে অনিশ্চয়তা:
প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের দুর্বল উপার্জনের পরে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আংশিক পুনরুদ্ধারের আশা থাকলেও বাজার এখনও বড় ধরনের পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা করতে পারছে না।
সেক্টরভিত্তিক বিশ্লেষণ
- ক্ষতির মুখে: ব্যাংকিং, আইটি, আর্থিক পরিষেবা, ও ভোক্তা পণ্য।
- উন্নতিতে: ফার্মা সেক্টর প্রায় ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজার মূলধনের ক্ষতি
বিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সামগ্রিক বাজারমূল্য প্রায় ৩ লক্ষ কোটি কমে ৫০ লক্ষ কোটিতে নেমে এসেছে। গত চার দিনে প্রায় ৯ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারের পুনরুদ্ধার নির্ভর করবে ভবিষ্যতের আয়ের পুনরুদ্ধার এবং মুদ্রানীতির স্থিতিশীলতার উপর।