Home শিল্প-বাণিজ্য শেয়ার বাজারে অব্যাহত টালমাটাল পরিস্থিতি, লোকসানের মুখে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা

শেয়ার বাজারে অব্যাহত টালমাটাল পরিস্থিতি, লোকসানের মুখে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা

0

বৃহস্পতিবার আবরও মিশ্র প্রবণতায় দিন শেষ করল ভারতীয় শেয়ারবাজার। বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বজায় থাকায় বাজারের দিকনির্দেশ নিয়ে অনিশ্চয়তাও অব্যাহত রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধারাবাহিক শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণাগুলি বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করেছে, ফলে ইকুইটিতে অংশগ্রহণ কমেছে এবং মূল সূচকগুলি সংকীর্ণ পরিসরে লেনদেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে।

এ দিনের লেনদেনে আর্থিক খাতের শেয়ার কিছুটা সহায়তা করলেও, রিয়েল এস্টেট ও অটোমোবাইল খাতের তীব্র পতন নিফটি ফিফটি ও সেনসেক্সকে আগের দিনের বন্ধের স্তরের কাছাকাছি ধরে রেখেছে। তবে বিস্তৃত বাজার প্রবল বিক্রির চাপে ছিল এবং বেঞ্চমার্ক সূচকগুলোর তুলনায় ধারাবাহিকভাবে দুর্বল পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, যার ফলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা উল্লেখযোগ্য লোকসানের মুখে পড়লেন এ দিনও।

নিফটি ফিফট সূচক ০.০১ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২২,৫৪৫ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে, আর সেনসেক্স ০.০১ শতাংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে ৭৪,৬১২ পয়েন্টে লেনদেন শেষ করেছে। নিফটি মিডক্যাপ ১০০ সূচক ১.১৪ শতাংশ কমে ৪৯,১৩৬.৭৫-এ নেমে গেছে, এবং নিফটি স্মলক্যাপ ১০০ সূচক ১.৬৪ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৫,১৫৬-এ থিতু হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীরা বাজারে যে কোনো স্বল্পমেয়াদি উত্থানকে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বিক্রির সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন, যা স্বল্পমেয়াদি পুনরুদ্ধার নিয়ে তাঁদের অনাস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

সম্প্রতি বিক্রির চাপ আরও বেড়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে, খুচরা বিনিয়োগকারী, ফ্যামিলি অফিস এবং উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারীরা (HNIs) বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীদের (FPIs) সঙ্গে মিলে শেয়ার বিক্রি করছে, যার ফলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে (DIIs) বিক্রির চাপ সামাল দিতে হচ্ছে।

“এফওয়াই২৫-এ এখন পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নগদ বাজার থেকে ₹৩,৮৭,৯৭৬ কোটি মূল্যের শেয়ার বিক্রি করেছে। তবে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এই বিক্রির চেয়ে বেশি পরিমাণে ₹৫,৫৫,৫১৯ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে। তবুও, বাজার নিম্নমুখী রয়েছে। সম্ভবত, উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারী (HNIs), অতিঊচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারী (UHNIs) ও ফ্যামিলি অফিসের কার্যক্রম, যা DIIs-এর তথ্যে প্রতিফলিত হয় না, বাজারকে প্রভাবিত করছে। এই ‘স্মার্ট’ বিনিয়োগকারীরা মূলনীতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্পোরেট আয়ের মন্দার কারণে তারা বিক্রির পথে থাকতে পারে,” বলেন জিয়োজিত ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর প্রধান বিনিয়োগ কৌশলবিদ ড. ভি কে বিজয়কুমার।

মোদ্দাকথা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের মনোভাবকে চাপে ফেলেছে, যেখানে বর্ধিত বাণিজ্য উত্তেজনা বাজারের মূল উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়ে ট্রাম্প দাবি করেছেন যে এই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী “যুক্তরাষ্ট্রকে দুর্বল করার জন্য তৈরি হয়েছে।”

বুধবার, নিজের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে, ট্রাম্প জানান যে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানির উপর শুল্ক ২ এপ্রিল কার্যকর হবে এবং ইউরোপীয় গাড়ি ও অন্যান্য পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ “পাল্টা” শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। সবমিলিয়ে শেয়ার বাজারের এই টালমাটাল পরিস্থিতি এখনই ঘোচার নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version