অজন্তা চৌধুরী
বাইরে গ্রীষ্মের তীব্র দহন, আর ভিতরে চলছে ‘বর্ষবরণ, ১৪৩১’। দক্ষিণ কলকাতার বিড়লা অ্যাকাডেমি মঞ্চে ‘কুশীলব’ আয়োজন করেছিল এই বর্ষবরণ। উপস্থিত শ্রোতা-দর্শকরা পেলেন এক মনোরম সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।
সেই সন্ধ্যায় উপস্থাপিত হল শ্রুতিনাটক ‘প্রথম পার্থ’। শৌভিক মজুমদারের নেতৃত্বে বুদ্ধদেব বসুর লেখা এই কাব্যনাট্যের প্রযোজনা রেখে গেল সমসময়ে মনে করা জরুরি কিছু প্রসঙ্গ৷ সাধারণ ভাবে রাষ্ট্র বা সমাজ যা আড়াল করতে চায়, তা তুলে ধরার বিষয়টিই ভাবতে বাধ্য করল সবাইকে। শিল্প ও শিল্পীর দায়িত্ব সম্পর্কেও ভাবতে বাধ্য করল।
অসাধারণ পাঠে দর্শক-শ্রোতাদের মন কেড়েছেন কর্ণের ভূমিকায় শৌভিক মজুমদার, কুন্তীর ভূমিকায় সুমনা গুঁই ও কৃষ্ণের ভূমিকায় সুপ্রিয় দাস। দ্রৌপদীর ভূমিকায় পাঠ করেন ইনা বাগচী। দ্রৌপদীর মতো কঠিন চরিত্রটিকে শ্রুতিনাট্যে ফুটিয়ে তোলার কাজে তিনি অনেকটাই সফল। ভবিষ্যতে আরও ভালোর আশা রইল তাঁর কাছে। একই আশা রইল দুই বৃদ্ধের চরিত্রে যাঁরা পাঠ করলেন, সেই আদিত্য দাস ও বিকাশ মিত্রের কাছেও।
এই নাটকের পরিকল্পনা ও আবহ শৌভিক মজুমদারের। পরিমিত ও সুনিপুণ যন্ত্রসঙ্গীত অন্য মাত্রা যোগ করেছিল শ্রুতিনাটকটিতে। তাঁর প্রযোজনায় টানা ১ ঘন্টা ১৫ মিনিটের শ্রুতিনাটকটি দর্শককে একবারও অমনোযোগী হওয়ার সুযোগ দেয়নি। এর জন্য এর সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি মানুষের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা প্রশংসার দাবি রাখে।
বর্ষবরণের এই সন্ধ্যায় অন্যান্য পরিবেশনাও ছিল যথেষ্ট মনোগ্রাহী। বিভিন্ন কবির নানা কবিতার ডালি নিয়ে এসেছিলেন উর্মী রায়। রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশনায় ছিলেন ‘নিতারা ডান্স ট্রুপ’। এ ছাড়াও ছিল বাবলি দাস ও গোষ্ঠী এবং বৃন্দা রায়চৌধুরীর গান। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন সৃজিতা রায়। তাঁর পরিশীলিত উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গি মনে রাখার মতো।
আরও পড়ুন
তাপপ্রবাহ শেষ! বৃষ্টির পালা শুরু হতে চলেছে গোটা পশ্চিমবঙ্গে