নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজয়ার বার্তা বিষাদের নয়, বিজয়ার বার্তা আনন্দের। বিষাদের নয়, বিজয়া সাফল্যের উৎসব। তাই কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন সকলকে জানাচ্ছে ‘শুভ বিজয়া’। এ বছর কেষ্টপুর প্রফুল্লকাননের পুজো ২১তম বর্ষে পড়ল। এ বছর তাদের পুজোর থিম ‘শুভ বিজয়া’।
কেষ্টপুর প্রফুল্লকানন দুর্গাপূজার কর্মকর্তা কার্তিক রায় জানান, মহাপঞ্চমী থেকে বিজয় দশমী, এই ছ’ দিন ধরে ষোড়শ উপাচারে মায়ের আরাধনা করা হয়। বিজয়াদশমীর দিন ‘শুভ বিজয়া’ সম্ভাষণের মধ্যে দিয়ে কিছুটা বিষাদগ্রস্ত মন নিয়েই সকলে মায়ের পুজোর সমাপন করেন।
কার্তিকবাবুর কথায়, “প্রতি বছরই মা আসেন আমাদের কাছে। ছ’ দিনের পুজোর মধ্য দিয়ে মা দুর্গা হরণ করেন আমাদের মনের মধ্যে থাকা ছয় রিপুকে। শেষে বিজয়ায় লাভ হয় এক শুদ্ধ আত্মার। আবার এক নতুনের জন্ম হয়। তাই মা দুর্গার করুণায় এই উৎসব সাফল্যের, এ উৎসব উল্লাসের। এ উৎসব বিষাদের নয়। তাই আমরা একে অপরকে ‘শুভ বিজয়া’ বলে সম্ভাষণ জানাই।”
কেষ্টপুর প্রফুল্লকাননে এ বারের পুজোয় সামগ্রিক সৃজনের দায়িত্বে রয়েছেন দীপাঞ্জন দে। দীপাঞ্জনবাবুর কথায়, “আমাদের এখানে মূল থিমের নাম দিয়েছি শুভ বিজয়া। ছ’ দিনের দুর্গাপুজোয় বিভিন্ন পর্যায় থাকে। মায়ের আবাহন, পুজো, ধ্যান, আহুতি ও শেষে মায়ের নিরঞ্জন। প্রতিমা তো প্রতীকীস্বরূপ। মা যে অসুর নিধন করছেন তা তো আদতে আমাদের অন্তরে থাকা ষড়রিপু। আদতে আমাদের অন্তরে থাকা ষড়রিপুর বিসর্জন হচ্ছে আর আমাদের আত্মার জয়লাভ হচ্ছে। থিমের মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, প্রতিমার নিরঞ্জন হল আসলে মানুষের ষড়রিপুর নিরঞ্জন।”
থিমশিল্পী দীপাঞ্জনবাবু জানালেন, মণ্ডপের যাবতীয় সজ্জা হচ্ছে নৌকাকে ঘিরে। মণ্ডপের সজ্জায় লোহা, পেতল, টিনের মতো শক্ত উপাদানের পাশাপাশি খড়ের মতো নরম উপাদানও ব্যবহার করা হয়েছে। ৫ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে গড়ে উঠছে মণ্ডপ। মূল মণ্ডপে থিমের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নদীর অববাহিকা। প্রায় ৩০ ফুটের বেশি চওড়া একটা বিশাল নৌকা থাকছে। তার ওপর আরও ৮ খানা নৌকা থাকছে। ভিডিও প্রোজেকশন থাকছে। মূল প্রবেশপথে ৬টা চালচিত্র থাকছে। বিসর্জনের পর যে ভাবে মাটিতে গেঁথে থাকে সে ভাবে রাখা হচ্ছে।
দীপাঞ্জনবাবু আরও জানালেন, ছ’ রকম উপাদান দিয়ে চালচিত্র বানিয়ে ছটি রিপু বোঝানো হবে। এই ছ’টি উপাদান হল খড়, তামা, পেতল, লোহা, অ্যালুমিনিয়াম ও বাঁশ। এই ছয় উপাদান দিয়েই তৈরি হচ্ছে চালচিত্র। গোটা মণ্ডপসজ্জায় একটা ‘ছয়ের’ খেলা আছে। আর থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি হচ্ছে ঠাকুর।
কেষ্টপুর প্রফুল্লকাননের পুজোয় প্রতিমা তৈরির দায়িত্বে রয়েছেন নিখিল মিস্ত্রি। আলো নির্দেশনার দায়িত্বে রয়েছেন সুব্রত মল্লিক এবং আবহ নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছেন সাত্যকী বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন
ঢাকুরিয়া শহিদনগর সর্বজনীনের ৭৪তম বছরে থিম ‘পদ্মালয়ে পদার্পণ’
পাহাড় বাঁচানোর আবেদন নিয়ে বেলেঘাটা ৩৩ নং পল্লীবাসী বৃন্দের পুজোর থিম ’শৈলার্তি’