উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: দেখতে দেখতে জয়নগর মিত্রবাড়ির পুজো ৩০০ বছরে পা দিল এ বারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার অন্তর্গত জয়নগর মজিলপুর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝের মিত্রবাড়ির পুজোর এ বার ৩০০ বছর।
এই পুজো শুরু হয়েছিল কৃষ্ণমোহন মিত্রের আমল থেকে। কৃষ্ণমোহন মিত্র ইংরেজ সরকারের কাছে কাজ করতেন। পাশাপাশি ইংরেজদের কাছ থেকে তিনি জমিদার স্বীকৃতি পান। তার পর থেকেই জয়নগরে জমিদারিত্বের বিস্তার। এই জমিদারিত্বে সেই থেকেই পুজো চলে আসছে। চাকচিক্য আলোর রোশনাইয়ে ভরে উঠত চারিদিক। সেই সকল এখন অতীত। জমিদারিত্ব হারিয়ে গিয়েছে বটে, কিন্তু মা দুর্গার পুজা রীতি মেনেই হয়ে আসছে। অর্থের অভাবে পুজোর উপচারে ভাটা পড়েনি এখনও।
তবে স্বাভাবিক ভাবেই জৌলুস চাকচিক্যে ভাটা পড়েছে। জমিদারিত্ব ছিল, সে সময়ে মানুষ ভুরিভোজও পেত। সেই সবে এখন ভাটা পড়ে গিয়েছে। কর্মসূত্রে এই মিত্রবাড়ির সদস্যরা কেউ কলকাতায় থাকেন বা কেউ কলকাতার বাইরে থাকেন। কিন্তু পুজোর সময় পঞ্চমীর দিন থেকেই সকলে এই দুর্গাপুজোয় যোগ দিয়ে থাকেন।
মিত্রবাড়ির সপরিবার দুর্গার কাঠামোয় বিশেষত্ব আছে – তিনচালা – লক্ষ্মী ও গণেশ একচালা, কার্তিক ও সরস্বতী একচালা, মা দুর্গা একচালা – এই তিনচালা মিলিয়ে এক কাঠামো। মিত্রবাড়ির যিনি মৃৎশিল্পী রয়েছেন, তিনি বংশপরম্পরায় এই মিত্রবাড়ির মা দুর্গার মূর্তি তৈরি করে আসছেন।
পরিবারের লোকজন জানালেন, তৎকালীন সময়ে পুজো চলত টানা এক মাস ধরে। এক মাস আগে থেকেই মায়ের বোধন শুরু হত। বাড়িতে আলোর রোশনাইয়ে সাজিয়ে তোলার জন্য তৎকালীন সময়ে হ্যাজাক লাইট ব্যবহার করা হত। আর এখন পুজো চলে পঞ্চমী থেকে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে, এই পুজোয় দশমীর দিন দুপুরে প্রতিমা বিসর্জন হয়। আর
পুজো দেখতে আসতে হবে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার নামখানা লোকালে, নামতে হবে জয়নগর-মজিলপুর স্টেশনে। সেখান থেকে রিকশা করে ১০ মিনিটে পৌঁছে যান মিত্রপাড়ায়।
আরও পড়ুন: ১৪২ বছর ধরে সব প্রথা মেনে পুজো হয়ে আসছে বলরাম দে স্ট্রিটের দত্তবাড়িতে