Home দুর্গাপার্বণ ‘আবোল তাবোল’-কে থিম করে ৯০তম বর্ষে সুকুমার রায়কে স্মরণ করছে হাতিবাগান নবীন...

‘আবোল তাবোল’-কে থিম করে ৯০তম বর্ষে সুকুমার রায়কে স্মরণ করছে হাতিবাগান নবীন পল্লী   

0

নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘হ্যাংলা হাতী চ্যাং-দোলা,/ শূন্যে তাদের ঠ্যাং তোলা।/ মক্ষীরাণী পক্ষিরাজ,/ দস্যি ছেলে লক্ষ্মী আজ।/ আদিম কালের চাঁদিম হিম/ তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম।/ ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর/ গানের পালা সাঙ্গ মোর’। সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোল’ গ্রন্থের সর্বশেষ রচনা ‘আবোল তাবোল’ শীর্ষক কবিতার শেষ কয়েকটি ছত্র। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে জীবন নিয়ে এ রকম রসিকতা বোধহয় শুধুমাত্র সুকুমার রায়ের পক্ষেই করা সম্ভব।

কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান ‘ননসেন্স ভার্স’-এর জনক সুকুমার রায়। তাঁর প্রয়াণের ৯ দিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম বই ‘আবোল তাবোল’। অর্থাৎ নিজের এই কালজয়ী সৃষ্টিকে বইয়ের আকারে দেখে যেতে পারেননি সুকুমার।

সে ক্ষেত্রে এই ২০২৩ এক দিকে যেমন ‘আবোল তাবোল’ গ্রন্থের ১০০ বছর, তেমনই তার স্রষ্টা সুকুমার রায়ের প্রয়াণেরও ১০০ বছর। ৯০তম বর্ষে উত্তর কলকাতার হাতিবাগান নবীন পল্লী শুধু সৃষ্টিরই শতবর্ষ উদযাপন করছে না, তার স্রষ্টাকেও স্মরণ করছে। তাই এ বছরে তাদের থিম ‘১০০তে আবোলতাবোল’। হাতিবাগান নবীন পল্লী এ বার সুকুমারময়।

‘আবোল তাবোল’-এর কবিতাগুলির কথা উঠলেই অনিবার্য ভাবে চলে আসে কবিতার সঙ্গে আঁকা ছবিগুলির প্রসঙ্গও। বলা বাহুল্য সুকুমার রায় এখানেও অদ্বিতীয়। ইলাস্ট্রেশনেও সুকুমার রায় যে সমান সফল তার প্রমাণ এই ছবিগুলি।

নবীন পল্লীর এই থিমকে সফল করে তুলতে এগিয়ে এসেছে গোটা পাড়া। পুরো পাড়াটা সাজিয়ে তোলা হয়েছে এই থিমে। পূজা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা গোটা এলাকাটিকেই থিম করে ফেলেছেন। আর তার জন্য এলাকার বেশ কিছু বাড়িতে থিম অনুযায়ী রং করতে হয়েছে। এক ঝলক ঠিক যেন আবোল তাবোল। তার ছড়া, তার কবিতা, তার ছবি দিয়ে আঁকা হয়েছে বিভিন্ন বাড়ির দেওয়াল।

তবে থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে শুধু আশেপাশের পরিবেশই তৈরি করা নয়, মণ্ডপের ক্ষেত্রেও থাকছে এক চমক। যে প্রেসে ‘আবোল তাবোল’ প্রথম ছাপা হয়েছিল, তারই আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ।

পুরো কাজটা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে এসেছেন এলাকার মানুষজন। থিম অনুযায়ী যে সব বাড়ির রং করা হয়েছে, সে সব বাড়ির মালিকরা যদি চান, তাঁদের বাড়িগুলি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক, তা হলে পুজোর পর তা করে দেওয়া হবে বলে আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে।  

সুকুমার রায় বাঙালির আবেগ। তাই তাঁকে যথাযথ ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে হাতিবাগান নবীন পল্লী শুধু পুজোর থিমই ‘আবোল তাবোল’ করেনি, পুজোয় সময় যে সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, সেখানেও ‘আবোল তাবোল’-এর কয়েকটি কবিতা অভিনয় করে দেখানো হবে। এলাকার ছেলেমেয়েরাই সেই অভিনয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। আয়োজকদের আশা, সুকুমার রায়কে নিয়ে তাঁদের পুজোর থিম এ বার দর্শনার্থীদের মনে জায়গা করে নেবে।

ছবি: রাজীব বসু ও ফেসবুক

আরও পড়ুন

দীর্ঘ পথ পেরিয়ে বড়িশা সর্বজনীন পড়ল ৭৫ বছরে, তাই এ বার তাদের থিম ‘মাইলস্টোন’

‘কথাবলী – কথা ও কবিতার অন্য পাঁচালী’ এ বার বালিগঞ্জ কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের দুর্গাপূজায়

ট্যাংরা ঘোলপাড়ার এ বারের পুজোর থিম ‘দান’, সচেতন করা হচ্ছে অঙ্গদান সম্পর্কে

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version