Home শিক্ষা ও কেরিয়ার সেনসেক্স-নিফটিতে পতন অব্যাহত! তবে কি শেয়ার বাজার থেকে এখনই বেরিয়ে আসা উচিত?

সেনসেক্স-নিফটিতে পতন অব্যাহত! তবে কি শেয়ার বাজার থেকে এখনই বেরিয়ে আসা উচিত?

0

ভারতীয় শেয়ার বাজার সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছানোর পর ক্রমাগত বিক্রির চাপে রয়েছে। সোমবারেও মূল সূচকগুলিতে তীব্র উত্থান-পত্তন দেখা গেল।

গত পাঁচ মাসে নিফটি ফিফটি সূচক রেকর্ড উচ্চতা ২৬,২৭৭ থেকে কমে ২২,১২৪-এ নেমে এসেছে, যা ৪,১৫৩ পয়েন্ট বা প্রায় ১৬ শতাংশ পতনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিএসই সেনসেক্স গত শুক্রবার ৭৩,১৯৮ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে, যা তার সর্বোচ্চ ৮৫,৯৭৮ পয়েন্ট থেকে ১৫ শতাংশ কম। একইভাবে, ব্যাঙ্ক নিফটি সূচক ৪৮,৩৪৪-এ শেষ হয়েছে, যা রেকর্ড উচ্চ ৫৪,৪৬৭ থেকে ১১.২৫ শতাংশ কম।

বৃহত্তর বাজারেও বিক্রির ধাক্কা তীব্র হয়েছে। বিএসই মিড-ক্যাপ সূচক সর্বোচ্চ স্তরের তুলনায় ২২ শতাংশ এবং বিএসই স্মল-ক্যাপ সূচক প্রায় ২৫.৫০ শতাংশ পতন করেছে। এই পরিস্থিতিতে, যখন বিনিয়োগকারীরা গত পাঁচ মাসে ভারতীয় শেয়ার বাজারে প্রায় ৯৪ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন, তখন অনেক খুচরো বিনিয়োগকারী ভাবতে পারেন—এখন কি বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়, না কি কম দামে শেয়ার কিনে বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ নেওয়া উচিত?

বাজারের এই অনিশ্চয়তার মধ্যে শেয়ার বিক্রি করা উচিত কিনা, সে প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, যখন চ্যালেঞ্জ থাকে, তখনই সুযোগ আসে। প্রতিভাবানরা আলাদা কিছু করেন না, তাঁরা একই কাজ ভিন্নভাবে করেন। শেয়ার বাজারের এই মন্দায় বিনিয়োগ কৌশল বদলানো জরুরি। অস্থির বাজারে ইন্ট্রাডে ট্রেডিং কঠিন হয়ে পড়ে, তাই এখন দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের সময়। যখন বাজার বুলিশ বা বিয়ারিশ থাকে, তখন ট্রেডিং করা ভালো। তবে এখন ক্যাশ ধরে রাখা এবং স্টপ-লস ব্যবহার করে বিনিয়োগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

এ কথা সবসময়ই প্রযোজ্য, বাজারে রিটার্ন সবসময় সমানভাবে আসে না। দীর্ঘ সময় স্থবির থাকার পর হঠাৎ করেই চরম বৃদ্ধির ধারা দেখা যায়। যদি কেউ বাজারের ওঠানামা বুঝে ইনভেস্টমেন্ট করা বা বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে সেই উত্থান পর্ব মিস করলে বড় ক্ষতি হতে পারে। যেমন, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গড় রিটার্ন ছিল ১৮ শতাংশ, কিন্তু যদি আপনি এই সময়ের সেরা তিনটি মাস মিস করতেন, তাহলে রিটার্ন হতো -৫ শতাংশ।

মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য বাজার পতনকে সুযোগ হিসেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, সাম্প্রতিক কয়েকটি ট্রেডিং সেশনে বাজারে বড় পতন হয়েছে, যা শেয়ার কেনার আদর্শ সুযোগ। তবে বিনিয়োগের আগে বাজারের বিভিন্ন ঝুঁকি ও মূল ট্রিগারগুলি বিশদে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।

বাজারের অনিশ্চয়তায় শেয়ার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটি কোম্পানির আয় বৃদ্ধি, ঋণের পরিমাণ এবং প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান বিশ্লেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যেসব সংস্থার শক্তিশালী ব্যালেন্স শিট, টেকসই আয় বৃদ্ধি এবং খাতের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাগুলি দেখা উচিত। সেগুলিই বাজারের এই অস্থিরতা সহ্য করতে পারবে এবং দীর্ঘমেয়াদে ভালো রিটার্ন দিতে পারবে।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে হঠাৎ বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত না নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী কৌশল অনুযায়ী বিনিয়োগ করা ভালো হতে পারে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। অস্থিরতার সময় ডিভিডেন্ড দেওয়া শেয়ার ও মৌলিকভাবে শক্তিশালী সংস্থার স্টক কেনার সুযোগ নেওয়া যেতে পারে। বাজারের ওঠানামা স্বাভাবিক, তাই সঠিক গবেষণা ও পরিকল্পনা করেই বিনিয়োগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version