Home পরিবেশ প্যাঙ্গোলিনের নয়া প্রজাতির খোঁজ পেয়েছেন জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার গবেষকরা

প্যাঙ্গোলিনের নয়া প্রজাতির খোঁজ পেয়েছেন জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার গবেষকরা

0

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি যে প্রাণী পাচার হয় তা হল প্যাঙ্গোলিন। স্তন্যপায়ী প্রাণীটির সারা শরীর ঢাকা থাকে বড়ো বড়ো কেরাটিন স্কেল বা খোলস দিয়ে। শিকারের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে খোলসের মধ্যে নিজেকে ঢুকিয়ে একেবারে গোল হয়ে যায়।

প্যাঙ্গোলিন-গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা গেল। পাচার হওয়া প্যাঙ্গোলিন উদ্ধার করার পর ডিএনএ পরীক্ষা করে জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (জেডএসআই) বিজ্ঞানীরা একটি নতুন প্রজাতির প্যাঙ্গোলিন চিহ্নিত করেছেন। নয়া প্রজাতির প্যাঙ্গোলিনের নাম ইন্দো-বার্মিজ প্যাঙ্গোলিন (মানিস ইন্দোবার্মানিকা, Manis indoburmanica)।

জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানীদের দাবি, নতুন প্রজাতির প্যাঙ্গোলিনটি প্রায় ৩৪ লক্ষ বছর আগে চিনা প্যাঙ্গোলিন (মানিস পেন্টাডাক্টিলা, Manis pentadactyla) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। বিশ্বের জীববৈচিত্র্যের হটস্পটগুলির মধ্যে ইন্দো-বার্মা অঞ্চল উল্লেখযোগ্য। সেখানে ভূ-জলবায়ু পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইন্দো-বার্মিজ নামক প্রজাতির প্যাঙ্গোলিনের বেড়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।

জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অধিকর্তা ড. ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই অসাধারণ আবিষ্কারটি জীববৈচিত্র্যের ঐতিহ্য এবং সংরক্ষণের প্রয়োজনীতার বিষয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছে৷ ইন্দো-বার্মিজ প্যাঙ্গোলিনকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। নতুন প্রজাতির প্যাঙ্গোলিনের আবিষ্কার শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং তাদের সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের যে প্রয়োজন রয়েছে তা-ও বোঝা যায়। নানা কারণে ভূ-জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে।”

জ্যুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার গবেষক ড. মুকেশ ঠাকুরের নেতৃত্বে এই গবেষণায় মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম বিশ্লেষণের জন্য অত্যাধুনিক জিনোমিক টুল ব্যবহার করা হয়েছে। নতুন প্রজাতির এই প্রাণীর গবেষণায় ড. মুকেশ ঠাকুরের সঙ্গে ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি স্কলার লেনরিক কনচোক ওয়াংমো। অরুণাচল প্রদেশের হলোটাইপ এবং প্যারাটাইপ নমুনা শনাক্ত করতে ওয়াংমো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

স্তন্যপায়ী প্রাণী প্যাঙ্গোলিনের ৮টি আলাদা আলাদা প্রজাতি পাওয়া যায় গোটা বিশ্বে। ৪টি আফ্রিকায় আর ৪টি এশিয়ায় পাওয়া যায়। গবেষকরা এশিয়ান প্যাঙ্গোলিনের জিনগত বৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা চালান মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে। ৪১টি প্যাঙ্গোলিনের ওপর গবেষণা চালানো হয়। অটোমেটিক বারকোড গ্যাপ ডিসকভারি পদ্ধতি ব্যবহার করে প্যাঙ্গোলিনের জিনগত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা জানতে পেরেছন যে, ইন্দো-বার্মিজ প্যাঙ্গোলিন প্রায় ৩৪ লাখ বছর আগে চিনা প্যাঙ্গোলিন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। এই দুই প্রজাতির প্যাঙ্গোলিনের মধ্যে ০.০৩৮ জেনেটিক দূরত্ব এবং ৩.৮% বারকোড ব্যবধান রয়েছে, যা ‘মানিস ইন্দোবার্মানিকা’ যে চিনা প্যাঙ্গোলিন থেকে আলাদা তা প্রমাণ করে। একই সঙ্গে, এদের নির্দিষ্ট বাসস্থান ও বিচরণক্ষেত্রকেও চিহ্নিত করে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version