Home শরীরস্বাস্থ্য সস্তায় পুষ্টিকর, কেন খাবেন কলমি শাক? খাবেন না কারা?

সস্তায় পুষ্টিকর, কেন খাবেন কলমি শাক? খাবেন না কারা?

কলমি শাক, যা ইংরেজিতে Water Spinach বা Morning Glory নামে পরিচিত, স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং আমাদের দেহে নানা ধরনের উপকার করে। এই শাক শুধু উপকারিই নয়, সহজলভ্যও। কলমি শাকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো:

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ: কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, এবং ই রয়েছে। এছাড়া এতে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাসও পাওয়া যায়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে: কলমি শাকে থাকা ভিটামিন এ এবং বিটা-ক্যারোটিন চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কলমি শাকে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে: কলমি শাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী এবং শিশুদের জন্য এটি খুবই উপকারী।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: কলমি শাকে প্রচুর ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কলমি শাকে পটাসিয়ামের উপস্থিতি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

ত্বকের যত্ন: কলমি শাকে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: কলমি শাকের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

এই সব উপকারিতা ছাড়াও কলমি শাক রান্নায় সহজ এবং বিভিন্ন ধরনের খাবারের সাথে খাওয়া যায়, যা আমাদের খাদ্যাভ্যাসে পুষ্টি যোগ করে।

আরও পড়ুন। ধনীদের মধ্যে ক্যান্সারের জেনেটিক ঝুঁকি বেশি, জানাচ্ছে নতুন গবেষণা

যদিও কলমি শাক পুষ্টিকর এবং অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। বিশেষত, নিচের ব্যক্তিদের কলমি শাক খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ উচিত:

কিডনির সমস্যা থাকা ব্যক্তিরা: কলমি শাকে অক্সালেটের উচ্চ পরিমাণ থাকতে পারে, যা কিডনির সমস্যা বা কিডনি স্টোনের প্রবণতা থাকলে সমস্যা বাড়াতে পারে।

আয়রন ওভারলোড বা হেমোক্রোমাটোসিস রোগীরা: কলমি শাকে প্রচুর আয়রন থাকে, তাই যাদের দেহে আয়রনের অতিরিক্ত মাত্রা রয়েছে বা হেমোক্রোমাটোসিস রোগ রয়েছে, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।

অ্যালার্জি প্রবণ ব্যক্তিরা: কিছু লোকের জন্য কলমি শাক অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। যারা সবজির প্রতি অ্যালার্জি আছে তারা কলমি শাক খাওয়ার আগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

নিম্ন রক্তচাপের রোগীরা: কলমি শাক রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, তাই যাদের রক্তচাপ ইতিমধ্যেই কম, তাদের জন্য এটি অতিরিক্ত রক্তচাপ কমাতে পারে।

গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীরা: গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী নারীরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত কলমি শাক খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ কিছু উপাদান শিশু বা গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যা: কলমি শাকে উচ্চ ফাইবার থাকে, যা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া বা পেটের অন্যান্য সমস্যা হতে পারে।

এই কারণগুলো মাথায় রেখে, যারা উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলোর কোনটিতে ভুগছেন, তারা কলমি শাক খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version