আজকাল ব্যস্ত দৌড়ঝাঁপে ভরা জীবনযাত্রায় সকলেই ইঁদুরদৌড়ে ব্যস্ত। চাকরির জগৎ ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। ব্যবসার অবস্থাও তথৈবচ। ব্যাঙ্ক, ডাকঘরে কমছে সুদ। ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগই বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। দৈনন্দিন সাংসারিক খরচখরচা, অসুখবিসুখ ও সামাজিক জীবনের দায়িত্বভার বহন করতে গিয়ে আজকাল বয়স্করা সঞ্চয় ভেঙে খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
সকলেই পেনশনভোগী হন না। তাই অবসরোত্তর জীবনে আরাম করে বাঁচার সুখ অনেকেরই থাকে না। অবসর বলে কিছু নেই। সুস্থ ভাবে জীবনযাপন করতে রোজগার করতে বাধ্য হন বহু প্রবীণ নাগরিক। এর ফলে নিরন্তর মানসিক উদ্বেগ, অবসাদ ও যন্ত্রণার শিকার হচ্ছেন বয়স্করা। দেশকাল নির্বিশেষে একই চিত্র ধরা পড়ছে।
আমেরিকান গেরিয়াট্রিক্স সোসাইটির (American Geriatrics Society) জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে সব বয়স্ক মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে একটানা উদ্বেগ ও মানসিক অবসাদের শিকার হচ্ছেন তাঁদের ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বিশেষ করে ৬০-৭০ বছর বয়সিরা নিরন্তর মানসিক উদ্বেগের মধ্যে থাকলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যায়। সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন বেশি পরিমাণে।
দু’ হাজারেরও বেশি মানুষের ওপর এক দশকের বেশি সময় ধরে একটানা গবেষণা চালানো হয়। যাঁদের নিয়ে গবেষণা চালানো হয় তাঁদের গড় বয়স ছিল ৭৬ বছর। এর মধ্যে ২১% মানুষ এক সময় মানসিক উদ্বেগ ও অবসাদে ভুগতেন। ৫ বছর পর উদ্বেগ বাড়লে তাঁদের বলা হত ক্রনিক অ্যাংজাইটি আর নতুন করে উদ্বেগে ভুগতে শুরু করলে বলা হত নিউ অনসেট অ্যাংজাইটি। উদ্বেগের মাত্রা বিচার করা হয় ১০টি প্রশ্নের মাধ্যমে। গবেষণায় দেখা যায়, আগে থেকে যাঁরা উদ্বেগে ছিলেন তাঁদের ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ২.৮ গুণ বেশি। যাঁদের গবেষণা চলাকালীন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে তাঁদের ডিমেনশিয়া হওয়ার আশঙ্কা ৩.২ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন
মোবাইল-নির্ভর জীবন আপনাকে ‘নোমোফোবিয়া’র দিকে ঠেলে দিচ্ছে না তো?