Home শরীরস্বাস্থ্য ভারতে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে পদ্ধতিগত দূর্বলতা রয়েছে, বিপদ ঘটতে পারে আন্তর্জাতিক স্তরেও, উদ্বেগ...

ভারতে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে পদ্ধতিগত দূর্বলতা রয়েছে, বিপদ ঘটতে পারে আন্তর্জাতিক স্তরেও, উদ্বেগ হু-র

মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে অন্তত ২০ শিশুর মৃত্যু দূষিত কফ সিরাপ খেয়ে। কফ সিরাপে বিষাক্ত ডাইইথিলিন গ্লাইকোল মেলায় উদ্বিগ্ন WHO। সংস্থার মালিক গ্রেফতার, উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ।

cough syrups

বিষাক্ত কফ সিরাপ খেয়ে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে অন্তত ২০ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে বিষাক্ত। তদন্তে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সিরাপগুলিতে পাওয়া গিয়েছে ডাইইথিলিন গ্লাইকোল (DEG)—যা কি না একটি শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)

WHO জানিয়েছে, ভারতের ওষুধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে, যা শুধু দেশের নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও বিপদের কারণ হতে পারে। কারণ এই ওষুধগুলি অসংগঠিত বাণিজ্যিক চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশেও পৌঁছতে পারে

তিন সংস্থার কফ সিরাপে বিষাক্ত রাসায়নিক

ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল (DCGI) তিনটি দূষিত কফ সিরাপ চিহ্নিত করেছে—

  1. Coldrif (Sresan Pharmaceuticals)
  2. Respifresh (Rednex Pharmaceuticals)
  3. ReLife (Shape Pharma)

এই তিনটি ওষুধের উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান সরকার ইতিমধ্যেই Coldrif ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, এবং কিছু রাজ্যে দুই বছরের নিচে শিশুদের জন্য সব কফ ও কোল্ড সিরাপই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

 গ্রেফতার সংস্থার মালিক, বাতিল হচ্ছে লাইসেন্স

Sresan Pharmaceuticals-এর মালিক জি. রঙ্গনাথন (৭৩)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি দক্ষিণ ভারতের ফার্মা শিল্পের এক অভিজ্ঞ উদ্যোক্তা। তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্য মন্ত্রী মা সুব্রামনিয়ান জানিয়েছেন, “ওই সংস্থার উৎপাদন লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করা হচ্ছে।”

তদন্তে উঠে এসেছে ভয়াবহ চিত্র, ওষুধ তৈরির জলে বিশুদ্ধকরণের ব্যবস্থা ছিল না, নোংরা পরিবেশে ওষুধ সংরক্ষণ করা হতো, পেস্ট কন্ট্রোল ছিল না, কোয়ালিটি মনিটরিং বা ডেটা সংগ্রহ বিভাগই ছিল না।

 চিকিৎসক গ্রেফতার, দায় ঘাড়ে নিয়ন্ত্রকদের

শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তার প্রবীণ সোনি-কে গ্রেফতার করা হয়েছে অবহেলার অভিযোগে। তবে চিকিৎসক মহলের একাংশের দাবি, দায় কেবল চিকিৎসকের নয়, বরং অপর্যাপ্ত পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগের ইতিহাস

ভারতের কফ সিরাপ নিয়ে উদ্বেগ নতুন নয়।

  • ২০২৩ সালে, ভারতীয় কফ সিরাপের খেয়ে গাম্বিয়া ও উজবেকিস্তানে ৮৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।
  • ২০১৯-২০ সালে, জম্মু ও কাশ্মীরে অন্তত ১২ শিশুর মৃত্যু ঘটে অনুরূপ বিষাক্ত সিরাপে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই ঘটনাগুলি প্রমাণ করছে, ভারতের ওষুধ উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণে পদ্ধতিগত দুর্বলতা রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যের জন্য ‘গুরুতর হুমকি’।

আরও পড়ুন: শহুরে জীবন, কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ, ‘কুল ইমেজ’ দেখানোর মোহে ধুূমপান বাড়ছে তরুণী ও মহিলাদের মধ্যে, জানাচ্ছে সমীক্ষা

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version