৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর ২১৪ সেনা পণবন্দিকে হত্যা করা হয়েছে। এমনটাই দাবি করলেন পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক করা বালোচ বিদ্রোহীরা। বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) জানিয়েছে, তাদের রাজনৈতিক পণবন্দিদের মুক্তির শর্ত পাকিস্তান সরকার প্রত্যাখ্যান করায় তারা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
বুধবার, বিদ্রোহীরা সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেন, যাতে এই সময়ের মধ্যে বালোচ রাজনৈতিক কর্মীদের মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু পাকিস্তান সরকার কোনও আলোচনা করেনি এবং সেনাবাহিনী ‘অহংকার’ দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিদ্রোহীরা। বিএলএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “পাকিস্তান তার চিরাচরিত জেদ এবং সামরিক ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে, বাস্তবতাকে অস্বীকার করেছে। এর ফলেই সব পণবন্দিকে হত্যা করা হয়েছে।”
বালোচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে লড়াইরত বিএলএ মঙ্গলবার পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করে, রেললাইন উড়িয়ে দেয় এবং ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ট্রেনে ৪০০-র বেশি যাত্রী ছিলেন, যাঁদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
অন্য দিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ৩০ ঘণ্টার অভিযান শেষে বুধবার ট্রেন হাইজ্যাকের ঘটনা শেষ হয় এবং ৩৩ জন বিদ্রোহী নিহত হয়। সেনাবাহিনীর মতে, এই ঘটনায় ২৩ জন সেনা, তিনজন রেলকর্মী এবং পাঁচজন সাধারণ যাত্রী নিহত হয়েছেন।
তবে, বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, লড়াই এখনও চলছে এবং পাকিস্তানি বাহিনী ‘গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন’ হচ্ছে। তাদের সর্বশেষ বিবৃতিতে বিএলএ জানিয়েছে, “আমাদের ১২ জন যোদ্ধা এই অভিযানে শহিদ হয়েছেন।”
বিএলএ আরও জানায়, “আমাদের যোদ্ধারা কিছু পণবন্দি সেনাকে বিশেষ বগিতে আটকে রেখে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, অন্যরা কিছু পণবন্দিকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। পাকিস্তানি কমান্ডো বাহিনী পৌঁছানোর পর তাদের ঘিরে তীব্র আক্রমণ চালানো হয়। এতে অনেক কমান্ডো নিহত হয়, আর পণবন্দিদেরও হত্যা করা হয়।”