নয়াদিল্লি: খুব তাড়াতাড়ি নিজেদের অত্যাধুনিক “আয়রন বিম” লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে ইজরায়েল। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, রকেট এবং মর্টারকে ধ্বংস করা সম্ভব। ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মতে, আয়রন বিম আগামী বছরের মধ্যেই সক্রিয় হবে। এখন যে আয়রন ডোম সহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, তা আরো শক্তিশালী করবে এই আয়রন বিম। শুধু তাই নয়, “যুদ্ধের এক নতুন যুগের” সূচনাও করবে।
ইজরায়েল সরকারের এই প্রকল্পে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি খরচ হয়েছে। বর্তমানে প্যালেস্তাইনের হামাস এবং ইরানে হিজবুল্লার সঙ্গে চলমান সংঘাতে আয়রন বিম কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আয়রন বিম ব্যবস্থাটি আলোর সমান গতিতে কয়েক মিটার থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে আঘাত করতে সক্ষম। এছাড়া, এর অপারেশন খরচ প্রায় শূন্য এবং এটি প্রতি আঘাতে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না।
আয়রন বিম ছোট ও হালকা প্রকল্পগুলিকে ধ্বংস করবে, যেখানে বড় লক্ষ্যবস্তু যেমন ব্যালিস্টিক মিসাইল মোকাবিলায় অ্যারো ২ এবং অ্যারো ৩ ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করা হবে। বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, এই সিস্টেমটি ছোট আকারের ড্রোন, যেগুলি হালকা ও রাডারে ধরা পড়া কঠিন, সহজেই ধ্বংস করতে পারবে, যা বিদ্যমান আয়রন ডোমের জন্য কঠিন ছিল।
আয়রন ডোম ব্যবস্থার এক একটি ইন্টারসেপ্টর মিসাইল উৎক্ষেপণে প্রায় ৫০,০০০ মার্কিন ডলার খরচ হয়, যেখানে আয়রন বিম তার তুলনায় অনেক কম খরচে কাজ করবে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকলে বা দৃশ্যমানতা কমে গেলে এটি ঠিকঠাক ভাবে কাজ করতে পারে না।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক সরঞ্জাম যেমন বি-৫২ বোম্বার, ফাইটার জেট এবং নেভি ডেস্ট্রয়ার মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া এই দ্বি-মুখী যুদ্ধে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লা এবং হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে ইজরায়েলের। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে ১,২০৬ জনের মৃত্যু হয়, যার বেশিরভাগই ছিল সাধারণ নাগরিক। এর পর থেকে ইজরায়েলের প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজায় প্রায় ৪৩,২৫৯ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফেও এই তথ্য বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করা হয়।
এই সংঘর্ষের আবহে মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমেরিকা, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যতম লক্ষ্য গাজায় বন্দি বিনিময় এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি। কিন্তু সমাধান এখনও অধরা।
