নেপালে উদ্যাপিত হয় পাঁচ দিনের ‘তিহার’ উৎসব। এ বছর ১২ নভেম্বর তিহার পড়েছে। তবে ১০ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিন ধরে উদযাপন করা হবে উৎসব। এই উৎসবের দ্বিতীয় দিনটি পরিচিত ‘কুকুর তিহার’ নামে। হ্যাঁ, নেপালে কুকুরকে সম্মান জানানোর একটি বিশেষ দিন এটি।
এই প্রথার মাধ্যমে আমরা দু’টি বিশেষ শিক্ষা নিতে পারি। প্রথমত, দীপাবলিতে আতসবাজি বা শব্দবাজির মাধ্যমে কুকুরের অস্বস্তি বাড়ানোর পরিবর্তে, তাদের যথাযোগ্য সাহচর্য করা। এবং অন্যটি অবশ্য, মানুষের প্রাচীনতম এই গৃহপালিত পশুটির প্রতি মানবজাতির কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন ঘরানায় পালন করা হয় আলোর উৎসব দিওয়ালি বা দীপাবলি। এই ভিন্ন ঘরানার মূল কারণ পরম্পরা। একই ভাবে প্রতিবেশী দেশ নেপালেও দিওয়ালি পালন করা হয় ধুমধাম সহকারে। সেখানে আবার এই উৎসবকে তিহার বলা হয়। ওই পাঁচ দিনের তিহার উৎসবের দ্বিতীয় দিনেই করা হয় কুকুরপুজো।
নেপালের পরম্পরায় একেক দিন একেক রকমের প্রাণীর পুজো করা হয়। যা শুরু হয় কাক তিহারের মাধ্যমে। প্রথম দিন (এ বছর ১০ নভেম্বর) করা হয় কাকের পুজো। কাক কষ্ট ও হতাশার প্রতীক। এ দিন কাকের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। বাড়ির ছাদে অথবা ঘরের দরজার সামনে সুস্বাদু খাবারের ডালি সাজিয়ে রাখা হয় দুখী কাকেদের জন্য।
কাকের আর্শীর্বাদ পাওয়ার পর দিনই (১১ নভেম্বর, ২০২৩) আসে কুকুরপুজো। নেপালে সে দিন কুকুর তিহার। নিজের বাড়ির কুকুর তো আছেই, পাশাপাশি রাস্তা-গলি-মহল্লার যত কুকুর রয়েছে, তাদের পুজো ও মহাভোজের বন্দোবস্ত করা হয়।
যমরাজের দূত মানা হয় কুকুরকে। একটা অংশের বিশ্বাস, যমরাজের দুই কুকুর ছিল- শ্যাম এবং সদল। যারা যমরাজের প্রাসাদের মূল ফটকে রক্ষী হিসাবে নিযুক্ত ছিল। এ ছাড়া হিন্দু ধর্মে সারমেয়র একাধিক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ রয়েছে। ফলে এ দিন নেপালে কুকুরকে ফুলের মালা, সিঁদুরের টিপ পরিয়ে সাড়ম্বরে পুজো করা হয়। একই সঙ্গে খাবারের তালিকাও বেশ জমকালো হয়ে ওঠে এ দিন।
তিন নম্বর দিনে (১২ নভেম্বর, ২০২৩) হয় গাই তিহার বা গোরুপুজো। চতুর্থ দিনে (১৩ নভেম্বর, ২০২৩) গোবর্ধনপুজো এবং পাঁচ নম্বর দিনে হয় ভাই টিকা বা ভাইফোঁটা (১৪ নভেম্বর, ২০২৩)।