নয়াদিল্লি: বায়ু দূষণের জেরে রাজধানী দিল্লিতে ঘোষিত হয়েছে ‘এয়ার ইমার্জেন্সি’। ক্রমশ বেড়ে চলা দূষণের মাত্রার প্রেক্ষিতে, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি শুক্রবার এবং শনিবার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি সরকার। সেই সময়সীমাই এ বার বেড়ে হল ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। পাশাপাশি বলা হয়েছে, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলগুলি পুরোপুরি বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন মনে করলে তারা অনলাইন ক্লাস চালাতে পারে।
প্রথম পর্যায়ে ৫ নভেম্বর পর্যন্তই প্রাথমিক স্কুলগুলি বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিল দিল্লি সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতির কোনো বদল হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতিশি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “দূষণের অত্যধিক মাত্রা অব্যাহত থাকায়, দিল্লিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। অন্য দিকে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য, স্কুলগুলি অনলাইন ক্লাসে করার বিকল্প বেছে নিতে পারে”।
পরিস্থিতি ভয়ানক থেকে অত্যন্ত ভয়ানক
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি ভয়ানক থেকে অত্যন্ত ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকার বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) চারশোর উপরে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালার মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে দিল্লিবাসীর। রবিবারেও বিষাক্ত ধোঁয়াশার একটি শ্বাসরুদ্ধকর আস্তরণ দিল্লিকে আবৃত করে রেখেছে। চিকিৎসকদের মতে, শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে যা ক্রমশ বেড়ে চলা শ্বাসকষ্ট এবং চোখের রোগের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক দিনে দিল্লি-এনসিআর জুড়ে একাধিক স্থানে সরকারি নিরাপদ সীমা প্রতি ঘনমিটারে ৬০ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে সাত থেকে আটগুণ বেড়েছে মাইক্রোস্কোপিক পিএম২.৫ কণা। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে এই কণার নিরাপদ সীমা প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ, এই কণার উপস্থিতি তার চেয়ে ৮০ থেকে ১০০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে দিল্লির বাতাসে। চিকিৎসকদের মতে, এই কণার আধিক্য ফুসফুসের রোগের কারণ হতে পারে।
কী কারণে এই পরিস্থিতি
জানা গিয়েছে, চলতি বছরের অক্টোবরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দিল্লির বায়ুর মান ২০২০ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ছিল। ২০২২ সালের অক্টোবরে ১২৯ মিমি এবং ২০২১ সালের অক্টোবর ১২৩ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সেই জায়গায় এ বছরের অক্টোবরে মাত্র ৫.৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল।
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দিল্লির বায়ু দূষণ শীর্ষে ওঠে যখন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকদের খড় পোড়ানোর পরিমাণ বেড়ে যায়। কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট রিপোর্ট করেছে যে এই বছর পঞ্জাব এবং হরিয়ানা উভয় স্থানেই খড় পোড়ানোর ঘটনা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কমেছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে তা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।
আরও পড়ুন: আইএসএল: ক্লাইটনের পেনাল্টি মিস, কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে হেরে হারের হ্যাটট্রিক ইস্টবেঙ্গলের