মার্কিন প্রশাসনের খরচ কমানো এবং কর ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আনতে বিতর্কিত ‘বড় ও সুন্দর’ বিলটিতে স্বাক্ষর করে তা আইনে পরিণত করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ওয়াশিংটনে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই ঘোষণা করেন তিনি। বিলে সইয়ের মুহূর্তে আমেরিকার সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমান উড়ে সমর্থন জানান, হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে উপস্থিত থাকেন শত শত সমর্থক।
এই আইনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিপুল পরিমাণে ব্যয় হ্রাস করতে চলেছে। পরিবর্তন আসবে দেশের কর ব্যবস্থাতেও। ট্রাম্পের দাবি, ‘‘এই আইন দেশের সমস্ত গোষ্ঠীর মানুষদের সুবিধা দেবে—সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার পর্যন্ত। এটাই আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় করছাড় ও ব্যয় সংযমের আইন।’’
কী রয়েছে এই আইনে?
- স্বাস্থ্য বিমার খাতে সরকারি ভর্তুকিতে বড়সড় কাটছাঁট হতে পারে
- বহু নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত নাগরিক স্বাস্থ্য বিমা সুবিধা হারাতে পারেন
- ২০১৭ সালের করছাড় আইনের ধারা এই বিলে স্থায়ী রূপ পেল
- সীমান্ত নিরাপত্তায় অতিরিক্ত বিনিয়োগ ও অভিবাসন বিরোধী অভিযান জোরদার হবে
এই আইন পাশ করতে গিয়ে হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টিটিভসে রিপাবলিকানদের কড়া লড়াই করতে হয়। মাত্র চার ভোটের ব্যবধানে (২১৮-২১৪) বিলটি বৃহস্পতিবার পাশ হয় নিম্নকক্ষে। উচ্চকক্ষ সেনেট আগেই তা মঞ্জুরি দিয়েছিল। ৪ জুলাইয়ের মধ্যে বিল পাশ করানোর জন্য রিপাবলিকানদের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। শেষপর্যন্ত সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।
মাস্ক বনাম ট্রাম্প: সমর্থনের বাইরে প্রযুক্তিপতি
তবে এই আইন নিয়ে প্রবল বিরোধিতা করেছেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। সরকারের খরচ রাশ টানার উদ্দেশ্যে যে বিশেষ দফতর ট্রাম্প তাঁর জন্য তৈরি করেছিলেন, সেখান থেকেই মাস্ক ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই আইন আমেরিকার অর্থনীতিকে ধ্বংস করবে।’’ বহু মানুষ চাকরি হারাবেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ট্রাম্প অবশ্য মাস্কের দাবি উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা দেশের ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন। কোনও ব্যক্তি বিশেষের আপত্তিতে আমাদের পথ বন্ধ হবে না।’’
নজর গোটা বিশ্বের
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই আইন ভবিষ্যতের আমেরিকান অর্থনীতি এবং সমাজব্যবস্থার উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারি খরচ হ্রাসের এই প্রচেষ্টা কতটা কার্যকর হয়, আর কতটা সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে—তা নির্ধারণ করবে আসন্ন নির্বাচনের চিত্র।