কলকাতা: রাজপুর সোনারপুর পুরসভার দেড় হাজারের বেশি আবাসনের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (সিসি) নেই, যার ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার ফ্ল্যাট মালিক। কারণ, সিসি না থাকার ফলে তাঁরা মিউটেশন করতে পারছেন না এবং প্রচুর পরিমাণে বকেয়া কর জমে গেছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রাজপুর সোনারপুর এলাকায় প্রায় ৮ হাজার আবাসন তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ১,৫০০টি বিল্ডিং এখনও সিসি পায়নি। প্রধানত মহামায়াতলা, গড়িয়া স্টেশন ও গড়িয়া সংলগ্ন কিছু এলাকায় এই সমস্যা প্রকট।
প্রোমোটারদের গাফিলতি, ক্ষতির মুখে বাসিন্দারা
পুরসভা জানিয়েছে, বড় কমপ্লেক্স বা গেটেড আবাসনের ক্ষেত্রে সাধারণত এই সমস্যা হয়নি। তবে রাস্তার ধারে তিন-চারতলা ছোট আবাসনগুলোর ক্ষেত্রে অধিকাংশ প্রোমোটারই সিসি সংগ্রহ করেননি। ফলে ফ্ল্যাট মালিকরাও এই সার্টিফিকেট পাননি এবং তাঁদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এক পুর আধিকারিক বলেন, “অনেক প্রোমোটারই বিল্ডিং তৈরি করেই চলে গেছেন, কিন্তু ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নেননি। এখন ফ্ল্যাট মালিকদের মিউটেশন আটকে আছে। ফলে তাঁরা ফ্ল্যাট বিক্রি করতে পারছেন না, কর জমে বাড়ছে।”
একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, “পুরসভা যদি আগেই ব্যবস্থা নিত, তাহলে এত জটিলতা তৈরি হতো না। এখন করের বোঝা বাড়ছে, অথচ সম্পত্তির কোনও লিগ্যাল আপডেট করা যাচ্ছে না।”
পুরসভার হস্তক্ষেপ ও আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি
এই পরিস্থিতিতে পুরসভা ফ্ল্যাট মালিকদের আশ্বস্ত করেছে যে, তাঁরা আবেদন করলে প্রয়োজন মতো সাহায্য করা হবে। একইসঙ্গে প্রোমোটারদের সিসি সংগ্রহের জন্য অবিলম্বে আবেদন করতে বলা হয়েছে, নাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজপুর সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল নজরুল আলি মণ্ডল জানান, “যেসব প্রোমোটার এখনও সিসি সংগ্রহ করেননি, তাঁদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, এই তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল গত ডিসেম্বর মাসে, যা সম্প্রতি শেষ হয়েছে। সেই রিপোর্ট নবান্নে পাঠানো হয়েছে।
পুরসভার হিসেবে, এই সমস্যার কারণে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষও দেরিতে ফ্ল্যাট কিনে সমস্যায় পড়ছেন।