কলকাতা: কলকাতা শহরের পাঁচ জায়গায় রাস্তার হকারদের নিয়ে সমীক্ষা শেষ হয়েছে। জনসাধারণের জায়গা দখল করে রাখার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন উষ্মা প্রকাশ করেন ঠিক তার পরের দিন ২৭ জুন ওই সমীক্ষা শুরু হয়।
ওই সব জায়গা আবার দ্বিতীয় দফা ঘুরে দেখা হবে। দেখা হবে, প্রথমবার গিয়ে যাঁদের স্টল চালাতে দেখা গিয়েছে তাঁরাই স্টল চালাচ্ছেন না কি তাঁদের হয়ে অন্য কেউ সেখানে বসে আছেন। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এ কথা বলেন। হাকিম জানান, এ ব্যাপারে একটা রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হবে।
কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের এক আধিকারিক বলেন, সমীক্ষার সময় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার হকারকে ওবেরয় গ্র্যান্ডের অ্যার্কেডে, নিউ মার্কেটের আশেপাশের রাস্তায় এবং গড়িয়াহাট, হাতিবাগান এবং বেহালায় দেখা গিয়েছে।
মেয়র বলেন, “পাঁচটি জায়গাতেই সমীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে। আমরা দ্বিতীয় দফার সমীক্ষায় পরীক্ষা করে দেখব প্রথম দফায় যাঁদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে তাঁরাই প্রকৃত পক্ষে স্টল চালাচ্ছেন কি না।”
ধর্মতলার ফুটপাথে হকার নিয়ন্ত্রণে পুলিশের মাইকিং। ছবি: রাজীব বসু।
“এমন হতেই পারে, নিজেদের নাম কেএমসি-র রেকর্ডে রাখার জন্য সমীক্ষার দিন মালিকরা এসে স্টল চালিয়েছেন। পরেরবারের পরিদর্শনে বোঝা যাবে, অন্য কেউ স্টল চালাচ্ছেন কি না”, এ কথা বলে মেয়র বলেন, “এর পর আমরা একটা রিপোর্ট তৈরি করব এবং তা মুখ্যমন্ত্রীকে দেব।”
রিপোর্ট কবে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হবে, সে সম্পর্কে মেয়র কিছু বলেননি।
সমীক্ষা চালানোর সময় কেএমসির আধিকারিকরা হকারদের নাম নথিভুক্ত করেছেন এবং তাঁদের ছবি নিয়েছেন। স্টলগুলির একেবারের কাছের বাড়িগুলির ঠিকানাও সংগ্রহ করেছেন। হকারদের আধার কার্ডের নম্বরও সংগ্রহ করেছেন সমীক্ষকরা।
রাস্তা জুড়ে হকারদের স্টল চালানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করার পরেই পুলিশ রাস্তায় নামে। হকাররা রাস্তা থেকে তাঁদের স্টল সরিয়ে নিয়েছেন কি না সমীক্ষায় তা দেখা হয়েছে।
নিউ এম্পায়ারের সামনের যে রাস্তা হুমায়ুন প্লেস তা হকারদের দখলে ছিল। পুলিশি তৎপরতার পর হকাররা হুমায়ুন প্লেস বরাবর ফুটপাথে উঠে গিয়েছেন। রাজ্য সরকার পথে বসে ব্যাবসা করার যে বিধি প্রণয়ন করেছে, সেই বিধি অনুযায়ী কোনো হকার রাস্তায় স্টল বানাতে পারবেন না। ফুটপাথ যতটা চওড়া তার এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে স্টল বানানো যাবে, বাকিটা ছেড়ে রাখতে হবে পথচারীদের জন্য।
নিউ মার্কেট অঞ্চলের আর-একটি রাস্তা বার্ট্রাম স্ট্রিট। এই রাস্তাটিও পুরোপুরি হকারদের দখলে ছিল। এখন ব্যবসায়ীরা রাস্তার ধারে চলে গিয়েছেন।
কেএমসি-র এক আধিকারিক বলেন, “সমীক্ষার সময় আমরা এমনও দেখেছি ফুটপাথের একই জায়গায় দু’জন হকার তাঁদের স্টল চালান। একজন চালান দুপুরে এবং আর-একজন সন্ধ্যায়। এ ধরনের হকারদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার।”
আরও পড়ুন
উত্তর কলকাতার কাশী বোস লেনে রাস্তা খুঁড়তেই উদ্ধার মহিলার পচাগলা দেহ