Home খেলাধুলো ফুটবল ইউরো কাপ ২০২৪: ইংল্যান্ড ২-১ গোলে পরাজিত, চারবার ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস...

ইউরো কাপ ২০২৪: ইংল্যান্ড ২-১ গোলে পরাজিত, চারবার ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করল স্পেন  

0
স্পেনের ইউরো কাপ জয়। ছবি spain football ‘X’ handle থেকে নেওয়া।

স্পেন: ২ (নিকো উইলিয়ামস, মিকেল ওয়ারজাবাল) ইংল্যান্ড: ১ (কোলে পালমের)

খবর অনলাইন ডেস্ক: এক যুগ পর আবার ইউরো চ্যাম্পিয়ন হল স্পেন। শেষবার তারা জিতেছিল ২০১২-তে। ১৯৬০-এ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ার পর স্পেনই হল একমাত্র দেশ যারা চারবার চ্যাম্পিয়ন হল। আর এবারেও ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়া হল না ইংল্যান্ডের। গত বারের মতো এবারেও তাদের রানার্স আপ হয়ে দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে। ইংল্যান্ড একবারও ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারল না।    

রবিবার ভারতীয় সময় মধ্যরাতে বার্লিন ওলিম্পিয়াস্টাডিওনে আয়োজিত ম্যাচে স্পেন ২-১ গোলে ইংল্যান্ডকে হারায়। ৩টি গোলই হয় দ্বিতীয়ার্ধে। স্পেন ১-০ গোলে এগিয়ে থাকার পর ম্যাচে সমতা ফেরায় ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ৮৬ মিনিটে জয়সূচক গোল করে স্পেন।

ভাগ্য এদিন ইংল্যান্ডের সঙ্গে ছিল না। স্পেন ২-১ গোলে এগিয়ে থাকার সময় ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে মিনিটখানেকের মধ্যে ইংল্যান্ডের ১টি হেড এবং ১টি শট খুবজোর বাঁচিয়ে দেয় স্পেন এবং তৃতীয় হেডটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এবং এই ৩টি ঘটনা ঘটে ১ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে। ইংল্যান্ডের সমর্থকরা হতাশ হয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকেন।

৬ জনের ‘গোল্ডেন বুট’

ম্যাচের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়। স্পেনের রোদরি ‘প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট’ হন। স্পেনেরই লামিনে ইয়ামাল পান ‘ইয়ং প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট’ পুরস্কার। আর ৩টি করে গোল করার জন্য ৬ জনের মধ্যে ‘গোল্ডেন বুট’ পুরস্কার ভাগ করে দেওয়া হয়। এঁরা হলেন হ্যারি কেন (ইংল্যান্ড), দানি ওলমো (স্পেন), কোডি গাকপো (নেদারল্যান্ডস), জর্জেস মিকাউতাদজে (জর্জিয়া), ইভান শ্রানৎজ (স্লোভাকিয়া) এবং ইয়ামাল মুসিয়ালা (জার্মানি)।         

জয়ের আনন্দ। ছবি spain football ‘X’ handle থেকে নেওয়া।

প্রথমার্ধ গোলশূন্য

ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিট উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটেনি। দুটি দলই নিজেদের ক্ষমতার মধ্যে ম্যাচকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছিল। দুটি দলই নিজেরা কোনো সুযোগ সৃষ্টি করার বদলে অন্যের ভুলের জন্য অপেক্ষা করছিল। বলের উপর দখলদারিতে অবশ্য স্পেন অনেকটাই এগিয়ে ছিল। প্রায় ৭০% দখলদারি ছিল স্পেনের।

ম্যাচের ২৩ মিনিটে গোল করার মতো একটা সুযোগ তৈরি হয়েছিল স্পেনের কাছে। ইংল্যান্ডের অর্ধে ফিক ফোডেনের ব্যাকপাস ধরে ফেলে স্পেন। বল চলে যায় লামিনে ইয়ামালের কাছে। তবে ইয়ামালের শটের উপর নজর রেখেছিলেন ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডার মার্ক গুয়েহি। তবে ইয়ামালের শট গোলের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যায়।

ম্যাচের ৩৬ মিনিটে কর্নার থেকে বল পান স্পেনের দানি ওলমো। তবে ওলমোর দুর্বল শট ইংল্যান্ডের ডিফেন্সের ক্লিয়ার করতে কোনো অসুবিধা হয়নি।

প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগে গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে ইংল্যান্ড। ডান দিকে বল পেয়ে যান জুড বেলিংহাম। তিনি বক্সের একেবারে ধারে পেয়ে যান হ্যারি কেনকে। কেনের শট আটকে দেন রদরি। কিন্তু সেই বলের দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন কাইল ওয়াকার। কিন্তু নিকো উইলিয়ামস তাঁকে ফাউল করেন। ডেক্লান রাইস ফ্রি-কিক নেন। সেই ফ্রি-কিক স্পেনের রোবিন লে নোরমান্দের ভুলে চলে যায় ফোডেনের কাছে। খুব দুরূহ কোণ থেকে ফোডেন যে শট নেন তা বাঁচিয়ে দেন স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমোন। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকে।

৮৬ মিনিটে জয়সূচক গোল ইতালির

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার দু’ মিনিটের মধ্যে গোল করল স্পেন। ইংল্যান্ডের বক্সের ঠিক ডান দিকে বল পেয়ে যান ইয়ামাল। তিনি বক্সে ঢুকে বাঁ দিকে পেয়ে যান উইলিয়ামসকে। উইলিয়ামস বাঁ দিক দিয়ে ইংল্যান্ডের গোলে বল ঢুকিয়ে দেন। ইংল্যান্ডের গোলকিপার পিকফোর্ড বল আটকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলেন।

স্পেনের ইউরো কাপ জয়। ছবি spain football ‘X’ handle থেকে নেওয়া।

গোল করে উজ্জীবিত হয়ে উঠল স্পেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আবার আক্রমণ। উইলিয়ামস বল পেয়ে দিলেন ওলমোকে। ওলমো ঘুরে গিয়ে যে শট নিলেন তা ইংল্যান্ডের গোলের একটু বাইরে দিয়ে চলে গেল। স্পেন পুরোপুরি চেপে ধরে ইংল্যান্ডকে। একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে তারা। ইংল্যান্ডের গোলকিপারকে ব্যস্ত রাখে তারা।

ম্যাচের ৫৬ মিনিটে স্পেনের আলবারো মোরাতা অনেকটা দৌড়ে ইংল্যান্ডের বক্সে ঢুকে পড়ে বল পেয়ে যান। তিনি পিকফোর্ডকে এড়িয়ে বল ঠেলে দিয়েছিলেন গোলের দিকে কিন্তু জন স্টোনস বল ক্লিয়ার করে দেন। কিন্তু বল চলে আসে উইলিয়ামসের কাছে। উইলিয়ামসের শট বাঁ দিকের পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

ম্যাচের ৬২ মিনিটে সুযোগ আসে ইংল্যান্ডের কাছে। বক্সের ডান দিকে বুকায়ো সাকাকে ফেলে দেন উইলিয়ামস। ফ্রি-কিক থেকে ফোডেন যে শট নেন তা বাঁচিয়ে দেয় স্পেনের ডিফেন্স। ইংল্যান্ডের আক্রমণ বাড়তে থাকে এবং তার ফল তারা পেয়ে যায় ম্যাচের ৭৩ মিনিটে। উইং দিয়ে এগিয়ে গিয়ে সাকা বক্সের মধ্যে পেয়ে যান বেলিংহামকে। বেলিংহাম আলতো ছোঁয়ায় বল পাঠিয়ে দেন কোলে পালমেরের কাছে। পালমেরের নিখুঁত শট বাঁ দিকের কোণ ঘেঁষে স্পেনের গোলে ঢুকে যায়। ম্যাচে সমতা ফেরায় ইংল্যান্ড।

ঠিক যখন মনে হচ্ছিল সাকা আর পালমেরের জন্য ইংল্যান্ড তাঁদের আক্রমণের ছন্দ একটু একটু করে খুঁজে পাচ্ছে, ঠিক তখনই দ্বিতীয় গোল করে বসল স্পেন। বাঁ দিক থেকে বল পেলেন মার্ক কুকুরেয়া। তিনি বল নিয়ে ছুটে ইংল্যান্ডের ছ’ গজি বক্সে ঢুকে পড়েন। সেখান থেকে তিনি যে শট নেন তা আলতো টোকায় ইংল্যান্ডের গোলে ঢুকিয়ে দেন মিকেল ওয়ারজাবাল। স্পেন এগিয়ে যায় ২-১ গোলে।

ম্যাচের ৮৯ মিনিটে গোল খাওয়া থেকে খুব জোর বেঁচে গেল স্পেন। কর্নার পেয়েছিল ইংল্যান্ড। ওলি ওয়াটকিন্‌সের কর্নার কিকে মাথা ছুঁইয়ে দেন রাইস। বল স্পেনের গোলে ঢোকার মুখে বাঁচিয়ে দেন সিমন। বল চলে যায় গুয়েহির কাছে। তাঁর শট গোললাইন থেকে বাঁচান দানি ওলমো। এবার বল আবার যায় রাইসের কাছে। রাইস হেড করেন। বল স্পেনের ক্রসবারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। একেই বোধহয় বলে রাখে হরি মারে কে! শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ২০২৪-এর ইউরো কাপ জিতে নিল স্পেন।

আরও পড়ুন

টানা দু’বার উইম্বলডন খেতাব কার্লোস আলকারাজের, এবার জোকোভিচ হার মানলেন স্ট্রেট সেটেই

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version