‘ছাত্র সমাজে’র ডাকা নবান্ন অভিযান কর্মসূচি ঘিরে রাজ্যের রাজনীতির উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিজেপি, সিপিএম, এবং কংগ্রেস অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে এই কর্মসূচিতে ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর পাশাপাশি ডিএ আন্দোলনকারীদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চও অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।
এই অভিযানের মুখে প্রশাসনও পুরোপুরি প্রস্তুত। প্রশাসনিক হেড কোয়ার্টার নবান্ন পর্যন্ত এই অভিযানকে এগোতে না দেওয়ার জন্য তৎপর হাওড়া সিটি পুলিশ। বিভিন্ন এলাকায় ব্যারিকেড লাগানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্সও মোতায়েন করা হবে। জলকামান ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে পুলিশের।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, ফোরশোর রোড এবং ময়দানে ব্যারিকেড বসানো হবে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ) এবং কমব্যাট ফোর্সও অভিযানের সময় মোতায়েন থাকবে। অভিযানকে কেন্দ্র করে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।
যান নিয়ন্ত্রণ
অভিযানের দিনে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় পণ্যবাহী যান চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করেছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার ভোর চারটে থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দ্বিতীয় হুগলি সেতু, খিদিরপুর রোড, তারাতলা রোড, এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পণ্যবাহী যান চলাচল সীমিত করা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার UGC-এর NET পরীক্ষাও রয়েছে। এই কারণে অনেক পরীক্ষার্থী তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে সমস্যায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাজ্য পুলিশ। তবে পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে যে, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
সোমবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেস নবান্ন অভিযান নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ দুটি গোপন ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করেছেন, নবান্ন অভিযানের সময় গুলি চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে খুনও হতে পারে।
কুণাল ঘোষের অভিযোগ, নবান্ন অভিযানের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।
এই অভিযোগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সাংবাদিক বৈঠকে জানান, নবান্ন অভিযানের সময় মহিলা এবং ছাত্রদের সামনে রেখে পিছন থেকে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি করার প্রচেষ্টা হতে পারে। তাঁর দাবি, এই কাজ করা হবে পুলিশকে বলপ্রয়োগে উস্কানি দিতে। যদিও, কারা এই কাজ করছে তা স্পষ্টভাবে বলেননি এডিজি, তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ছাত্র সমাজের এক প্রতিনিধি রবিবার কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে গিয়ে একজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
রাজনৈতিক উত্তেজনার পাশাপাশি ছাত্রদের এই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরে বাড়তি চাপ পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান রুখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, তবে পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে থাকবে, সেটাই দেখার বিষয়।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us