টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে কলকাতা পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সিবিআইয়ের হাতে তাঁর গ্রেফতারের পর, নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশের মধ্যে মনে হচ্ছে যে, উচ্চপদস্থ কর্তাদের নির্দেশ মেনে ‘দায়িত্ব’ পালনের ফলেই অভিজিৎকে গ্রেফতার হতে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে রবিবার লালবাজারে কলকাতা পুলিশের শীর্ষকর্তারা একাধিক বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নিচুতলার অফিসারদের দাবি, তাঁরা ভবিষ্যতে আর হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে কোনও নির্দেশ নেবেন না। বৈঠকে আরও ১৪টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অভিজিৎ মণ্ডলের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং তাঁর আইনি লড়াইয়ে সহায়তা করা।
কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার মনোজ বার্মা, এসটিএএফ-এর দায়িত্বে গেলেন বিনীত, অভিষেক গুপ্ত-কে ইএফআর-এ
অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে পুলিশকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে, এবং তাঁদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে যে, তাঁকে আইনি সহায়তা দিতে হবে এবং বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি শুনানিতে সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের উপস্থিত থাকতে হবে। একইসঙ্গে, তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করারও দাবি উঠেছে।
কলকাতা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের মধ্যে এই বৈঠকে আরও আলোচনা হয়েছে যে, সংবাদমাধ্যমে পুলিশের বিরুদ্ধে একতরফা সমালোচনা রুখতে প্রাক্তন পুলিশকর্তাদের মাধ্যমে পাল্টা বক্তব্য তুলে ধরা হবে। পুলিশকর্মীরা মনে করছেন, সমাজমাধ্যমে তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, এবং এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পক্ষ থেকে প্রচার চালানোর জন্য দক্ষ ব্যক্তিদের নিযুক্ত করা এবং বাজেট বরাদ্দ করারও প্রস্তাব উঠেছে।
প্রস্তাবগুলির মধ্যে পুলিশকর্মীদের দাবি ছিল, গ্রেফতারের প্রতিবাদে এক ঘণ্টার জন্য কাজ বন্ধ রাখা যায় কি না, তবে শীর্ষকর্তারা এই প্রস্তাবগুলি বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ায় আপাতত এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ সামাল দেওয়া এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের জন্য।