বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী জানিয়ে দিলেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের পরেও বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে সমর্থন করবে এবং এনডিএ জোটে নেতৃত্ব পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, নীতীশ কুমার ১৯৯৬ সাল থেকে বিহারে এনডিএ-র নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও তিনিই থাকবেন।
নীতীশ কুমারের পুত্র নিশান্ত কুমারের রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনা নিয়ে সম্রাট বলেন, এটা জেডিইউ-র অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তিনি জানান, বিজেপি জোটসঙ্গী হিসেবে জেডিইউ-র যে কোনও সিদ্ধান্তের পাশে থাকবে।
রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তেজস্বী যাদবকে “শুধুমাত্র লালু প্রসাদের মনোনীত ব্যক্তি” বলে কটাক্ষ করেন সম্রাট। তাঁর দাবি, “তেজস্বী নিজের যোগ্যতায় নেতা নন। লালু যাদব যাঁকে মনোনীত করবেন, তিনিই তাঁদের দলে গুরুত্ব পাবেন।”
তিনি আরও বলেন, অতীতে যখন জেডিইউ বিরোধী শিবিরে ছিল, তখন বিজেপি সমালোচনা করলেও, এখন জোটে ফেরার পর বিজেপি সম্পূর্ণভাবে এনডিএ-র অংশীদারদের পাশে রয়েছে।
নীতীশ কুমারের নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “জাতীয় স্তরে তিনি মোদীজির নেতৃত্বে কাজ করছেন, আর বিহারে তিনি আমাদের নেতা।”
এলজেপি (রামবিলাস) নেতা চিরাগ পাসওয়ান সম্পর্কে তিনি প্রশংসা করে বলেন, “চিরাগ একজন দক্ষ নেতা, যিনি এনডিএ জোটকে আরও শক্তিশালী করছেন।”
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ ২৪৩ আসনের মধ্যে ২০০-র বেশি আসন জয় করবে বলে দাবি করে তিনি বলেন, “ডবল ইঞ্জিন সরকার” বিহারে ব্যাপক উন্নয়ন এনেছে এবং জনগণ এই সরকারের ওপর ভরসা রেখেছে।
তিনি আরজেডি-র ১৫ বছরের শাসনাকালের অপরাধপ্রবণতা ও অরাজকতার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “সেই সময় বিহারে অপরাধীরা বাড়িতে ঢুকে খুন করত, এবং এমনকি লালু যাদবের কন্যার বিয়েতেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল।”
তেজস্বী যাদবের দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “যখন আরজেডি ক্ষমতায় ছিল, তখন তারাই মদ নিষিদ্ধ করেছিল, এখন তারা আবার তাড়ি বিক্রেতাদের ছাড় দেওয়ার কথা বলছে। যেই ডোমিসাইল নীতি নিয়ে তেজস্বী কথা বলছেন, সেটাই আরজেডি সরকার বাতিল করেছিল।”
তিনি তেজস্বীর উপ-মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থার দাবিকেও উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “বিহারে সমস্ত ক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী থাকলেও কার্যত তার কোনো শক্তি থাকে না। তেজস্বীর আত্মবিশ্বাস কেবল তার বাবার পার্টির দয়ায় এসেছে, তবে নির্বাচনই তাকে শেখাবে যে এটা কোনও রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা নয়।”
প্রসঙ্গত, ভোটকুশলী থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া প্রশান্ত কিশোর বুধবার তিনি দাবি করেছিলেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়লেও, পরে আবার দলবদল করতে পারেন। তবে তিনি এও বলেছেন যে, ৭৪ বছর বয়সি এই নেতা এতটাই জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন যে, যেই জোটেই থাকুন না কেন, পঞ্চম বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: বিহার ভোটের পর ফের দলবদল করবেন নীতীশ কুমার, লিখে রাখতে বললেন প্রশান্ত কিশোর