খবর অনলাইন ডেস্ক: ওলা-উবেরের রাজত্বে এবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল কেন্দ্র। ভারতের প্রথম সমবায় ভিত্তিক ট্যাক্সি পরিষেবা ‘ভারত ট্যাক্সি (Bharat Taxi)’ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করল কেন্দ্রীয় সরকার। উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হচ্ছে সহযোগিতা মন্ত্রক (Ministry of Cooperation) এবং ন্যাশনাল ই-গভর্ন্যান্স ডিভিশন (NeGD)-এর যৌথ প্রচেষ্টায়।
এই নতুন পরিষেবার মূল লক্ষ্য, চালকদের আয়ের উপর পূর্ণ মালিকানা প্রদান এবং যাত্রীদের জন্য একটি সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত স্বচ্ছ, নিরাপদ বিকল্প প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।
দীর্ঘদিনের অভিযোগের পর বিকল্প সমাধান
বিগত কয়েক বছরে ওলা ও উবেরের মতো বেসরকারি ট্যাক্সি পরিষেবাগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগের পর অভিযোগ উঠেছে —
- গাড়ির অস্বচ্ছতা ও অপরিচ্ছন্নতা
- অতিরিক্ত ভাড়া ও সার্জ প্রাইসিং
- অযৌক্তিক বুকিং বাতিল
- এবং সবচেয়ে বড় অভিযোগ, চালকদের কাছ থেকে ২৫% পর্যন্ত কমিশন কেটে নেওয়া
এই সমস্ত সমস্যার সমাধান হিসেবেই এসেছে ‘ভারত ট্যাক্সি’ প্ল্যাটফর্ম।
কমিশন নয়, সদস্যপদ মডেলে চলবে পরিষেবা
‘ভারত ট্যাক্সি’-তে কোনও কমিশন দিতে হবে না। চালকরা কাজ করবেন সদস্যপদ ভিত্তিক মডেলে, যেখানে শুধুমাত্র নগণ্য দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক ফি দিতে হবে।
ফলে, সরকারের মতে, চালকদের আয় বাড়বে এবং আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে।
নভেম্বরেই শুরু পাইলট প্রকল্প
- নভেম্বর মাসে দিল্লিতে শুরু হবে পাইলট প্রকল্প, যেখানে থাকবে ৬৫০টি গাড়ি ও তাদের মালিক-চালক।
- প্রকল্প সফল হলে ডিসেম্বরেই বড় আকারে চালু হবে পরিষেবা, এবং ধীরে ধীরে দেশের অন্যান্য বড় শহরে বিস্তৃত হবে।
- প্রাথমিক পর্যায়ে ৫,০০০ চালক (পুরুষ ও মহিলা) যুক্ত হবেন পরিষেবার সঙ্গে।
- আগামী এক বছরের মধ্যে পরিষেবা ছড়িয়ে পড়বে ২০টি শহরে, যেমন মুম্বই, পুনে, ভোপাল, লখনউ ও জয়পুর।
২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী—
- ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে ভারত ট্যাক্সি চালু হবে দেশের প্রধান মহানগরগুলিতে।
- ২০৩০ সালের মধ্যে এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হবে ১ লক্ষেরও বেশি চালক, যা পৌঁছে যাবে জেলা সদর ও গ্রামীণ এলাকাতেও।
সমবায় মডেলে পরিচালিত হবে প্ল্যাটফর্ম
‘ভারত ট্যাক্সি’ কোনও বেসরকারি কর্পোরেট সংস্থা নয়, বরং এটি হবে একটি সমবায় উদ্যোগ (Cooperative Enterprise)।
এর পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে ‘সহকার ট্যাক্সি কো-অপারেটিভ লিমিটেড (Sahakar Taxi Cooperative Ltd)’-এর হাতে, যা ২০২৫ সালের জুন মাসে গঠিত হয়েছিল ₹৩০০ কোটি টাকার প্রাথমিক মূলধনে।
এই সংস্থার তত্ত্বাবধান করবে একটি গভর্নিং কাউন্সিল, যার চেয়ারম্যান জয়েন মেহতা (ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আমুল-এর মূল সংস্থা GCMMF) এবং সহ-সভাপতি রোহিত গুপ্ত, (উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, NCDC)।
সরকারের বক্তব্য
এক সরকারি আধিকারিক বলেন, “ভারত ট্যাক্সি চালু হওয়ার মাধ্যমে চালকদের জন্য একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ও টেকসই বিকল্প তৈরি হবে। একইসঙ্গে যাত্রীরাও পাবেন নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী পরিষেবা।”
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us