Home খবর দেশ মিডিয়ার স্বাধীনতা মানে অপরাধী বেছে দেওয়ার লাইসেন্স নয়, তাৎপর্যপূর্ণ রায় হাইকোর্টের

মিডিয়ার স্বাধীনতা মানে অপরাধী বেছে দেওয়ার লাইসেন্স নয়, তাৎপর্যপূর্ণ রায় হাইকোর্টের

0

মিডিয়ার ভূমিকা ও দায়িত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট দিশানির্দেশ মিলল কেরল হাইকোর্টের একটি রায়ে। কেরল হাইকোর্টের ওই রায়ে বলা হয়েছে, মিডিয়া সংস্থাগুলোকে চলমান তদন্ত বা অপরাধমূলক মামলাগুলোর রিপোর্টিংয়ের সময় নিজেকে অনুসন্ধানী বা বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ভূমিকা থেকে বিরত থাকতে হবে।

কেরল হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির এই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি একে জয়শঙ্করণ নাম্বিয়ার, কাউসার এদাপ্পাগাথ, মহম্মদ নিয়াস সিপি, সিএস সুদা এবং শ্যাম কুমার ভিকে। বেঞ্চ ঘোষণা করেছে: “সংবাদ এবং মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, যা সংবিধানের ১৯(১)(ক) ধারার অধীনে একটি মৌলিক অধিকার, তা মিডিয়াকে কোনভাবেই আইনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রায় না আসা পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দোষী বা নির্দোষ বলে ঘোষণা করার ‘লাইসেন্স’ প্রদান করে না।”

এই রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, অসীমিত রিপোর্টিং অনেক ক্ষেত্রেই মতামতে পক্ষপাত ও বিচার বিভাগীয় ফলাফলের প্রতি জনসাধারণের অবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারে। উচ্চ আদালত উল্লেখ করেছে যে, মিডিয়ার দ্বারা ট্রায়াল করা জনমতকে অন্যায় ভাবে প্রভাবিত করতে পারে এবং সন্দেহভাজনদের উপর “পূর্বনির্ধারিত বিচার” হতে পারে, যা কার্যকর ভাবে একটি “ক্যাঙ্গারু কোর্ট” হিসেবে কাজ করে।

এই রায়টি তিনটি রিট পিটিশনের প্রতিক্রিয়ায় জারি করা হয়েছে। যেগুলি মিডিয়ার ক্ষমতাগুলোকে সক্রিয় তদন্ত ও চলমান মামলাগুলোর কভারেজে সীমাবদ্ধ করার জন্য আবেদন জানিয়েছিল। আগের একটি সিদ্ধান্তের পর থেকে “মিডিয়া ট্রায়াল” নিয়ে উদ্বেগের কারণে এই পিটিশনগুলো ২০১৮ সালে একটি বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে পাঠানো হয়েছিল।

আদালত তার বিস্তারিত আদেশে জোর দিয়ে বলেছে যে, মিডিয়ার স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার সংবিধান দ্বারা গ্যারান্টি দেওয়া হলেও, এটি যুক্তিসঙ্গত সীমাবদ্ধতার অধীন। বিশেষ করে যখন এটি কোনও ব্যক্তির গোপনীয়তা ও মর্যাদার অধিকারের সঙ্গে বিপরীতমুখী হয়ে পড়ে। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে ব্যক্তির গোপনীয়তা সুরক্ষিত।

আদালত বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে যে, মিডিয়ার সত্য ঘটনা রিপোর্ট করার অধিকার থাকলেও, তদন্তাধীন মামলাগুলোর উপর স্পষ্ট মতামত প্রকাশে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এ ধরনের সতর্কতা অবলম্বন না করলে এটি শুধুমাত্র অভিযুক্ত ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং বিচার বিভাগীয় ফলাফল যদি মিডিয়ার প্রকাশনার থেকে ভিন্ন হয় তাহলে জনসাধারণের আস্থা কমে যাওয়ার ঝুঁকিও সৃষ্টি করে।

আরও পড়ুন: র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে সাসপেন্ড হওয়া বর্ধমান মেডিক্যালের ৭ পড়ুয়াকে ক্লাস করার অনুমতি দিল হাইকোর্ট

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version