Home খবর দেশ ‘কলকাতা ল কলেজ ধর্ষণ ভিডিও’ সার্চে হুড়োহুড়ি! গুগল ট্রেন্ডসে ব্রেকআউট ক্যাটাগরিতে

‘কলকাতা ল কলেজ ধর্ষণ ভিডিও’ সার্চে হুড়োহুড়ি! গুগল ট্রেন্ডসে ব্রেকআউট ক্যাটাগরিতে

google trend

কলকাতার আইন কলেজে ২৪ বছরের এক আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগের পর এখন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আরও এক ভয়ঙ্কর তথ্য ঘিরে। ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও খুঁজতে নেটদুনিয়ায় ব্যাপক হারে বাড়ছে সার্চ! টাইমস অফ ইন্ডিয়ার (TOI) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ‘Kolkata law college rape video’ সংক্রান্ত গুগল সার্চ প্রবল বেড়ে গিয়েছে।

গুগল ট্রেন্ডস-এর তথ্য অনুযায়ী, এই সার্চ টার্ম ‘ব্রেকআউট ক্যাটাগরি’-তে চলে গিয়েছে। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৫,০০০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এই সংক্রান্ত সার্চ। রিপোর্ট বলছে, গত ২৭ জুন দুপুর ৩.৩০ থেকে ২৮ জুন ভোর ১.৩০-এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সার্চ হয়েছে এই বিষয়ে। এখনও পর্যন্ত ‘রাইজিং’ স্টেটাসে রয়েছে এই সার্চ।

TOI-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মূল অভিযুক্ত মনোজিত মিশ্রর মোবাইল থেকে অন্তত দু’টি ধর্ষণের ভিডিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত প্রমিত মুখার্জি ও জায়েব আহমেদের তোলা এই ভিডিওগুলি মনোজিতের ফোনে ছিল। অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, তাঁর নগ্ন অবস্থায় ভিডিও করা হয় এবং পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হয়।

ভিডিওগুলি ইতিমধ্যেই সল্টলেকের সাইবার ফরেনসিক ও ডিজিটাল এভিডেন্স পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

মনোবিজ্ঞানী রত্নাবলি রায়ের মতে, এই ধরনের ঘটনা ‘এরোটিক এক্সটর্শন’। তিনি বলেন, ‘‘যারা ‘রিভেঞ্জ পর্ন’ দেখে তারা হয়তো সরাসরি ধর্ষণ করেনি, কিন্তু মহিলাদের প্রতি নিয়ন্ত্রণ এবং অপমান করার মানসিক বাসনা চরিতার্থ করতে চায়।’’

ডিজিটাল অধিকার কর্মী এবং নারী অধিকার আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এই ভিডিও খোঁজার প্রবণতা আসলে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে ফের একবার ডিজিটাল মাধ্যমে নিগ্রহের শিকার করছে।

কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ধরনের ভিডিও খোঁজা, রাখা কিংবা শেয়ার করা আইনত অপরাধ। তিনি বলেন, ‘‘এটা শুধু বিকৃত মানসিকতা নয়, ডিজিটাল মাধ্যমে ফের একবার নিগৃহীত হচ্ছেন নির্যাতিতা।’’

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা এমন ভিডিও খুঁজছেন তাদের অনেকেই ‘সিক মাইন্ডসেট’-এর শিকার। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সব্যসাচী মিত্র জানিয়েছেন, ‘‘একদল মানুষ পর্নগ্রাফি আসক্ত, যারা নিজেদের আনন্দের জন্য এই ভিডিও দেখে। আবার কেউ কেউ সাইকোপ্যাথিক ঘটনার প্রতি আসক্ত, আর কেউ কেউ কৌতূহল কিংবা সহানুভূতি থেকে দেখতে চাইছে।’’

নারী অধিকার কর্মী অনুরাধা কাপুরের মতে, ‘‘এই ধরনের ভিডিও দেখার ইচ্ছার পেছনে অনেক সময় ক্ষমতার অনুভূতি কাজ করে। সমাজের একাংশের মানসিকতার প্রতিফলন এটি।’’

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর রাজর্ষি নেগীর কথায়, ‘‘মানুষের স্বাভাবিক কৌতূহল থাকতেই পারে। কিন্তু ধর্ষণের ভিডিও সার্চ করা ভয়ংকর মানসিক অবক্ষয়ের লক্ষণ। এটা অনেক সময় স্যাডিস্টিক বা ভয়্যরিস্টিক প্রবৃত্তি থেকে হয়। দেশে পর্ন আসক্তের সংখ্যাও বাড়ছে।’’

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version