Home খবর দেশ দমদম থেকে তৃণমূলকে আক্রমণে দূর্নীতিকেই প্রাধান্য মোদীর, কী এল পাল্টা জবাব?

দমদম থেকে তৃণমূলকে আক্রমণে দূর্নীতিকেই প্রাধান্য মোদীর, কী এল পাল্টা জবাব?

Modi Dumdum

বাংলার মাটিতে এসে তৃণমূল কংগ্রেসকে ফের একবার সরাসরি আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  শুক্রবার দমদমের সভামঞ্চ থেকে উন্নয়ন থেকে শুরু করে দুর্নীতি, মহিলা সুরক্ষা থেকে চাকরি— একাধিক বিষয়েই মোদী সরকারের কাজের তুলনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরলেন তিনি।

মোদী দাবি করেন, কেন্দ্রের পাঠানো প্রকল্প ও অর্থ বাংলার মানুষ পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না। দুর্নীতির জাল ও রাজনৈতিক স্বার্থে তা আটকে যাচ্ছে রাজ্য প্রশাসনের হাতে। বিশেষ করে ‘আয়ুষ্মান ভারত’, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’-র মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা বাংলার মানুষ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তাঁর বক্তৃতায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে মহিলা সুরক্ষা প্রসঙ্গ। সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলার মা-বোনেরা ভয়ের মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তৃণমূলের পক্ষে সম্ভব নয়।” একই সঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে মহিলাদের সুরক্ষা ও সম্মান নিশ্চিত হবে বলে আশ্বাস দেন।

রাজনৈতিক স্লোগানের পাশাপাশি মোদী এবার পরিবর্তনের বার্তাও দেন। তাঁর দাবি, “বাংলার মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। আগামী দিনে বাংলার মাটিতেও ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’ আসবে।”

সম্প্রতি সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে তৃণমূল সংসদে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। ওয়েলে নেমে কাগজ বিলের কপি ছিঁড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। রাজ্যে এসে এই বিল প্রসঙ্গ তৃণমূলকে একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী। উদাহরণ হিসাবে নাম না করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বালু প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন। 

এদিন তিনি বলেন,  ‘‘শিক্ষক নিয়োগ মামলায় গ্রেফতারির পরেও পদ ছাড়তে চাননি। তৃণমূলের আরও এক মন্ত্রী রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন। তিনিও মন্ত্রিত্ব ছাড়তে চাননি। মানুষের ভাবনা নেই এঁদের। এঁরা জনতাকে ধোঁকা দিয়েছেন। এঁদের সরকারি পদে থাকার অধিকার আছে?’’

মোদীর বক্তব্যের পরই তৃণমূল সাংবাদিক বৈঠক করে। তৃণমূল ভবনে সেই সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল ঘোষ বলেন, “কাঁচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদীর। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তাঁরাই মঞ্চে বসে।” এরপরেই কুণালের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন দুর্নীতিগ্রস্তদের আগে দুরে সরিয়ে দেখাক।  

ভিন রাজ্যে বাঙালিদের উপর আক্রমণকেই ভোটের ইস্যু করতে চাইছে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে মোদী খুব অল্পই জবাব দেন তাঁর ভাষণে। প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘‘বিজেপি সরকার সগর্বে বাংলা ভাষা আর বাংলা সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করছে। আমরাই বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছি।’’

বিশ্লেষকদের মতে, এই সভা বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। দমদমের মতো শহরতলির কেন্দ্র বেছে নেওয়া বিজেপির জন্য কৌশলগত পদক্ষেপ। এই এলাকা ঐতিহ্যগতভাবে বাম ও তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হলেও সম্প্রতি বিজেপির প্রভাব বাড়ছে। মোদীর সভা সেই উত্থানকে আরও সুসংহত করার চেষ্টা।

তৃণমূল অবশ্য মোদীর বক্তব্যকে তীব্র আক্রমণ বলে অভিহিত করেছে। দলের নেতারা দাবি করেছেন, বিজেপি রাজ্যের উন্নয়নে কোনও অবদান রাখেনি। বরং কেন্দ্রের অর্থ সাহায্য আটকে দিয়ে মানুষকে বিপাকে ফেলেছে।

এখন দেখার বিষয়, দমদমের মঞ্চ থেকে ছোড়া মোদীর এই বার্তা কতটা প্রভাব ফেলতে পারে রাজনীতির জমিতে।

আরও পড়ুন: আগের রায়ের বদল, নির্বীজকরণ করে পথকুকুরদের ফেরাতে হবে এলাকায়, আর কী নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version