Home খবর দেশ লক্ষাধিক ভক্তের ভিড়ে হুড়োহুড়ি! লায়রাই যাত্রায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু অন্তত ৬ জনের,...

লক্ষাধিক ভক্তের ভিড়ে হুড়োহুড়ি! লায়রাই যাত্রায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু অন্তত ৬ জনের, প্রশাসনের ‘হালকা মনোভাব’ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

হাসপাতালে আহতরা

ধর্মীয় আবেগের ঢেউ যখন লক্ষাধিক মানুষের ভিড়ে পরিণত হয়, তখন তার সঠিক নিয়ন্ত্রণ না থাকলে ঘটতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়। গোয়ার শিরগাঁওয়ে শনিবার ঠিক এমনটাই ঘটল। লায়রাই দেবীর যাত্রায় ভোররাতে ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৬ জনের, আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি। গুরুতর অবস্থায় ৮ জনকে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে ২ জনকে গোয়া মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছে।

এই মর্মান্তিক ঘটনার পিছনে প্রশাসনিক গাফিলতিরই অভিযোগ উঠছে। 

স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও গোয়া, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক থেকে হাজার হাজার ভক্ত জমায়েত হয়েছিলেন এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবে। অথচ, এত বড় জমায়েতের জন্য আগে থেকেই কোনও পর্যাপ্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা, জরুরি পরিষেবা বা রুট ম্যানেজমেন্টের ছাপ ছিল না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

দুর্ঘটনার পর গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ন্ত ও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রানে দ্রুত ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে ছুটে যান। আহতদের সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “ঘটনায় আমি শোকাহত। হাসপাতালে এসে আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।”

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মুখ্যমন্ত্রী সাওয়ন্তের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ও গোটা পরিস্থিতির খোঁজ নেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

ঘটনার পর জরুরি পরিষেবা চালু করা হয়েছে। ১০৮ অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার মাধ্যমে ৫টি অ্যাম্বুল্যান্স দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ও আরও ৩টি রাখা হয় জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসার জন্য আইসিইউ, ভেন্টিলেটরসহ সমস্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা।

তবে ঘটনার গভীরে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, এত বড় উৎসব আয়োজনের আগে প্রশাসনের তরফে যথাযথ পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল। বরাবরের মতো এবারে তীর্থযাত্রার নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় ‘হালকা’ মনোভাবই বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াল কিনা, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

স্থানীয় সূত্রে দাবি, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য না ছিল পর্যাপ্ত ব্যারিকেড, না ছিল কার্যকর রুট ম্যাপ বা পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক। তাছাড়া, পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্সের উপস্থিতিও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু, এই দুর্ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল— ধর্মীয় বা সামাজিক উৎসবে ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক উদাসীনতা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version