খবর অনলাইন ডেস্ক: র্যাঞ্চোকে মনে আছে? দিল্লির ‘ইম্পেরিয়াল কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর ছাত্র রণছোড় দাস শ্যামল দাস চাঁচর তথা র্যাঞ্চো, যার আসল নাম ফুনসুক ওয়াংরু, ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর যে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আমির খান। কিন্তু রিল লাইফের এই চরিত্র কিন্তু আদতে রিয়্যাল লাইফের এক বাস্তব চরিত্র। যাঁকে দেখে রাজকুমার হিরানি তাঁর ফিল্মের এই চরিত্রটিকে বানিয়েছিলেন তিনি হলেন ইঞ্জিনিয়ার তথা আবিষ্কারক তথা জলবায়ু-আন্দোলনকর্মী সোনম ওয়াংচুক।
কলকাতায় জুনিয়র ডাক্তারেরা যখন একদিকে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তখনই অনির্দিষ্টকালের জন্য দিল্লিতে অনশন চালাচ্ছেন সোনম ওয়াংচুক। ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’-এর দাবিতে ডাক্তারদের অনশন শুরু হয়েছে শনিবার ৫ অক্টোবর থেকে। আর লাদাখের জন্য রাজ্যের দাবি এবং আরও কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে ওয়াংচুক অনশন শুরু করেছেন রবিবার ৬ অক্টোবর থেকে। তাঁর অনশন এই রবিবার অষ্টম দিনে পড়ল।
ওয়াংচুক প্রথমে দিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে ধর্নায় বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ধর্নায় অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। অবশেষে দিল্লিতে লাদাখ ভবনের সামনে বসেছেন অনির্দিষ্টকাল অনশনে। ১৩ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশনে শামিল হওয়ার জন্য সকলকে ডাক দিয়েছেন সোনম। এই প্রতীকী অনশন হিমালয়ের জন্য বলে তিনি জানিয়েছেন।
টানা অনশনে শারীরিকভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন ওয়াংচুক। তাঁর জ্বর জ্বর ভাব রয়েছে, পেটের সমস্যাও হচ্ছে। নিজের সমাজমাধ্যমের পাতাতেই এক ভিডিয়ো বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন তিনি। অনশনের শুরু থেকেই তিনি নুন-জলের উপরেই রয়েছেন। চিকিৎসকেরা রোজ তাঁর শরীর পরীক্ষা করছেন। রক্তচাপের দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
লাদাখ নিয়ে নানা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব সোনম ওয়াংচুক। তাঁর অন্যতম দাবি, লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফশিলের আওতায় এনে তাকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হোক। তিনি চান, লাদাখের জন্য একটি পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা হোক এবং সেই সঙ্গে লেহ এবং কার্গিল জেলার জন্য পৃথক পৃথক লোকসভা আসন বরাদ্দ হোক।
লাদাখ বিষয়ক এই সব দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্ণগোচর করতে অনুগামীদের নিয়ে লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত পদযাত্রা করেন ওয়াংচুক। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানার কাছে দিল্লি পুলিশ তাঁকে আটক করে। ২ অক্টোবর রাতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
লাদাখ সংক্রান্ত এই সব দাবি নিয়ে এর আগেও একাধিকবার অনশনে বসেন ওয়াংচুক। গত মার্চ মাসে ২১ দিন অনশন চালান তিনি। তার আগে গত বছরেও অনশনে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর দাবিতে কর্ণপাত করেনি কেন্দ্র। এই অবস্থায় আবার অক্টোবরের শুরুতে ফের একবার অনশনে বসলেন সোনম ওয়াংচুক। দেখা যাক, কেন্দ্রের টনক নড়ে কি না।