Home খবর দেশ নোটবন্দি নিয়ে রায় সুপ্রিম কোর্টের, কী বলল সর্বোচ্চ আদালত

নোটবন্দি নিয়ে রায় সুপ্রিম কোর্টের, কী বলল সর্বোচ্চ আদালত

0

নয়াদিল্লি: নোটবন্দি মামলায় ৫৮টি আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা করে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, সুপ্রিম কোর্ট মনে করে যে আরবিআই আইনের ধারা ২৬(২)-এর অধীনে দেওয়া ক্ষমতা ব্যবহার করে সম্পূর্ণ সিরিজের ব্যাঙ্ক নোট বাতিল করা যেতে পারে। তবে কোনো নির্দিষ্ট সিরিজের জন্য তা প্রযোজ্য নয়।

২০১৬ সালে দেশে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোটবন্দি (demonetisation) ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই বছরের ৮ নভেম্বর, রাত ৮টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন, সাধারণের কাছে ৫০০ কিংবা ১০০০ টাকা থাকলে তা যেন ব্যাঙ্কে জমা করে দেওয়া হয়। আচমকা সেই নির্দেশে দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় হই হট্টগোল। প্রতিটি ব্যাঙ্কের সামনেই দেখা যায় লম্বা লাইন। বেশ কিছু অঘটনও ঘটে। এইসবের পরিপ্রেক্ষিতে পালটা সুপ্রিম কোর্টেও বেশ কিছু মামলাও দায়ের করা হয়। আর সেই সব মামলারই দীর্ঘ শুনানি চলার পর আজ রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট।

এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে ৫৮টি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। বিচারপতি এস আবদুল নাজিরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানির পর গত ৭ ডিসেম্বর এই মামলার রায় স্থগিত করে। বিচারপতি নাজির ছাড়াও সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্য ৪ সদস্য হলেন- বিচারপতি বিআর গভই, এএস বোপান্না, ভি রামসুহ্মণ্যম এবং বিভি নাগরত্ন।

কেন্দ্রের নোটবন্দি প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে সুপ্রিম কোর্ট এ দিন বলে,সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ নয়। কারণ, যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েই কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছিল। সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে প্রায় ৬ মাস ধরে আরবিআই এবং কেন্দ্র আলোচনা করেছিল। অন্য দিকে, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করার জন্য যে ৫২ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল, সেটাও নিতান্ত কম নয়।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, আনুপাতিকতার ভিত্তিতে নোট বাতিলের অনুশীলন বন্ধ করা যাবে না। নোটবন্দিকে চ্যালেঞ্জ করে যে ৫৮টি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল, সেগুলি বাতিল করে দিল সর্বোচ্চ আদালত। সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, কী ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা বিবেচনা করে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে পাল্টানো যায় না। তবে এই রায়ের বিপক্ষে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন বলেন, ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোটের পুরো সিরিজ বাতিল করার জন্য একটি আইনের দরকার ছিল, একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নয়।

এর আগে কেন্দ্র দাবি করেছিল, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (RBI) অ্যাক্ট, ১৯৩৪-এর অধীনে যে কোনো মুদ্রার নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সরকারের। নোটবন্দির পরপরই, সংসদও স্পেসিফাইড ব্যাঙ্ক নোটস (সেসেশন অফ লায়বিলিটি) অ্যাক্ট, ২০১৭ পাস করে। সবমিলিয়ে, নিয়ম না মেনেই নোটবন্দি করা হয়েছিল, এমন যুক্তি সঠিক নয়।

তবে কেন্দ্রে যে আরবিআই আইন, ১৯৩৪-এর বিধানের কথা উল্লেখ করছে, আবেদনকারীদের পক্ষে উপস্থিত হয়ে সেই যুক্তিকেও খণ্ডন করেছিলেন প্রবীণ আইনজীবী পি চিদাম্বরম। তিনি বলেন, এই আইনের ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী, নোট প্রত্যাহার করার আগে জনগণকে প্রথমে জানানো উচিত, কিন্তু ঘোষণার পরপরই, দেশের ৮৬ শতাংশ মুদ্রা অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এ কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক সংকটে পড়তে হয়েছিল মানুষকে। তাদের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version