শনিবার রাতে দ্বিতীয় দফায় ১১৯ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে নিয়ে একটি মার্কিন সামরিক বিমান পাঞ্জাবের অমৃতসর বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
গত ১০ দিনের মধ্যে এটি দ্বিতীয় বিমান। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি ১০৪ জন ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। রবিবার আরও ১৫৭ জন অভিবাসীকে নিয়ে আরেকটি বিমান ভারতে পৌঁছবে বলে জানা গেছে।
শনিবার রাত ১১:৪০ মিনিটে অমৃতসর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে আমেরিকার সামরিক বাহিনীর সি-১৭ বিমানটি।
ডিপোর্টিদের মধ্যে ৬৭ জন পাঞ্জাবের, ৩৩ জন হরিয়ানার, ৮ জন গুজরাটের, ৩ জন উত্তরপ্রদেশের, ২ জন করে গোয়া, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের এবং ১ জন করে হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা।
এই বিমান অবতরণের মাত্র একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়েছিল। উভয় রাষ্ট্রনেতা অবৈধ অভিবাসনের ইস্যু সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মোদী উল্লেখ করেছিলেন, ভারতীয় নাগরিকদের অবৈধ পথে আমেরিকা পাঠানোর একটি বৃহৎ চক্র সক্রিয় রয়েছে এবং এই প্রতারণার অবসান প্রয়োজন।
পাঞ্জাবকে ‘ডিপোর্টেশন সেন্টার’ করার অভিযোগ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। ডিপোর্টিদের ফেরত পাঠানোকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মান। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই পদক্ষেপ পাঞ্জাব ও পাঞ্জাবিদের ‘কলঙ্কিত’ করতে এবং অমৃতসরকে ‘ডিপোর্টেশন সেন্টারে’ পরিণত করার প্রয়াস।
তিনি বলেন, “এই ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে যাতে গোটা বিশ্বের সামনে এই বার্তা যায় যে কেবলমাত্র পাঞ্জাবিরাই অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দেন। যদি সরকার সত্যিই নিরপেক্ষ হয়, তবে তারা দিল্লি বা আমদাবাদ বিমানবন্দরে এই বিমান অবতরণ করাতে পারে। পাঞ্জাব সরকার সম্মানের সঙ্গে তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করবে, তবে আমরা স্পষ্ট করে দিতে চাই যে অবৈধ অভিবাসন শুধু পাঞ্জাবের সমস্যা নয়, এটি জাতীয় সমস্যা।”
এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারির প্রথম দফার ডিপোর্টিদের মধ্যে ৩৩ জন হরিয়ানার, ৩৩ জন গুজরাটের, ৩০ জন পাঞ্জাবের, ৩ জন মহারাষ্ট্রের, ৩ জন উত্তরপ্রদেশের এবং ২ জন চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা ছিলেন। তাদের মার্কিন টেক্সাসের সান আন্তোনিও থেকে সামরিক বিমানে ফেরানো হয়েছিল।
ডিপোর্টিদের হাতকড়া পরানো এবং শিকল দিয়ে বেঁধে আনার ঘটনায় দেশে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।
বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালানো হচ্ছে যাতে ডিপোর্টিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার না করা হয়। তবে এটি নতুন কিছু নয়, দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের ডিপোর্টেশন হয়ে আসছে।”
আমেরিকার অবস্থান প্রসঙ্গে ভারতে মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের অভিবাসন আইন প্রয়োগ করা জাতীয় নিরাপত্তা ও জনসাধারণের সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন প্রশাসনের নীতি অনুযায়ী, যাদের দেশে থাকার অধিকার নেই, তাদের ফেরত পাঠানো হবে।”