শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক ক্রমশ সফল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র হয়ে উঠছে। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের পর এবার সিংহের সফল প্রজনন ঘটল এই পার্কে। প্রায় ১১ মাস আগে সিংহ দম্পতি সুরজ ও তনয়া দুটি শাবকের জন্ম দিলেও একটির মৃত্যু হয় জন্মের পরপরই। তবে কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে একটি শাবক সুস্থভাবে বড় হচ্ছে। শাবকটির নামকরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বনদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রী জানান, গত এক বছরে শুধু সিংহের শাবকই নয়, বেঙ্গল সাফারিতে জন্ম নিয়েছে আরও চারটি সাংহাই হরিণ ও তিনটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। অর্থাৎ, এক বছরে পার্কে নতুন অতিথির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট। তিনি আরও জানান, বেঙ্গল সাফারিতে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে, ফলে আয়ও বেড়েছে।
প্রজননের সাফল্য ও বেঙ্গল সাফারির অগ্রগতি
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ত্রিপুরার সিপাহিজলা চিড়িয়াখানা থেকে সুরজ ও তনয়া নামে সিংহ দম্পতিকে আনা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের নামকরণ করেন। পার্কে আসার পর থেকেই এই সিংহ দম্পতির মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়, যা সফল প্রজননে সাহায্য করেছে। এক বছরে সাফারিতে সিংহের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন।
বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা পার্ক পরিদর্শন করেন এদিন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য জু অথরিটির সদস্যসচিব সৌরভ চৌধুরী, উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জে ভি, বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনের ডিএফও রাজা এম, পার্কের ডিরেক্টর বিজয় কুমার, সহকারী ডিরেক্টর অভিষেক চৌধুরী সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ভবিষ্যৎ প্রকল্প
সাফারি পার্কে বাঘের সংখ্যা এখন ১১টি। সফল প্রজননের ফলে এখানে জন্ম নেওয়া আটটি বাঘ অন্যান্য চিড়িয়াখানায় প্রাণী বিনিময় প্রক্রিয়ায় পাঠানো হয়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে—
🔹 শিশুদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার পার্ক
🔹 সজারুর জন্য নতুন এনক্লোজার
🔹 ছোট পাখিদের জন্য পাখিরালয়
🔹 অজগর ও গোসাপের জন্য আলাদা ঘর
🔹 কম্বো সাফারির জন্য নতুন প্রবেশদ্বার
এছাড়া, শীঘ্রই চশমামুখো লেঙ্গুর, ম্যান্ড্রিল, জলহস্তী ও সাংহাই হরিণের জন্য আলাদা এনক্লোজার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বেঙ্গল সাফারির উন্নয়ন ও সফল প্রাণী সংরক্ষণ কার্যক্রম পশ্চিমবঙ্গের বন ও পর্যটন খাতকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।