আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে আবারও শুরু হচ্ছে বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া। তার প্রস্তুতি হিসেবেই নির্বাচন কমিশন (EC) রাজ্যের ভোটার তালিকার এক নজিরবিহীন মানচিত্র তৈরি করেছে — যাতে তুলনা করা হয়েছে ২০০২ সালের বিশেষ তালিকা সংশোধনের (SIR 2002) সময়কার ভোটার তালিকা এবং বর্তমান ২০২৫ সালের ভোটার তালিকাকে।
এই তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সাতটি জেলায় ৫১.৩% থেকে ৬৫.২% ভোটারের নাম উভয় তালিকাতেই রয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্যের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি ভোটার দুই সময়ের তালিকায় সাধারণভাবে চিহ্নিত।
সবচেয়ে বেশি নামের মিল পাওয়া গিয়েছে কালিম্পংয়ে (৬৫.২%), এরপর পশ্চিম মেদিনীপুরে (৬২.৯%) এবং পুরুলিয়ায় (৬১.২%)। অন্যদিকে, সর্বনিম্ন মিল পাওয়া গিয়েছে ঝাড়গ্রামে (৫১.৩%), তার উপরে রয়েছে আলিপুরদুয়ার (৫৩.৭%)। কলকাতার উত্তর বিভাগে এই মিলের হার ৫৫.৩% বলে জানিয়েছে কমিশন।
এই তথ্যগুলি ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে আপলোড করা হয়েছে।
ভোটার তালিকা মিললে সহজ হবে পরবর্তী প্রক্রিয়া
নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যেসব ভোটারের নাম দুই তালিকাতেই রয়েছে, তাঁদের সন্তানরা SIR প্রক্রিয়ার সময় কঠোর যাচাইয়ের ধাপগুলি এড়াতে পারবেন। পিতামাতার ভোটার আইডি দেখিয়েই তাঁরা সহজেই নতুন ভোটার হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। অন্যদের তুলনায় এই প্রক্রিয়া হবে অনেক সরল।
ঝাড়গ্রামে নামের মিল সবচেয়ে কম: মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল জানিয়েছেন, ঝাড়গ্রামে নামের মিল সবচেয়ে কম কারণ ২০০২ সালে SIR হওয়ার সময় জেলায় বহু আদিবাসীর কোনও পরিচয়পত্রই ছিল না।
তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “নতুন SIR প্রক্রিয়ায় সব প্রকৃত ভোটারের নামই অন্তর্ভুক্ত করা হবে, এমনকি যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় ছিল না বা যাঁদের পিতামাতার নাম মেলেনি, তাঁদেরও।”
আগরওয়াল আরও বলেন, “অনেক ভোটার ১৯৯৫ সালে EPIC (Electors Photo Identity Card) পেয়েছিলেন, কিন্তু ২০০২ সালের তালিকায় তাঁদের নাম ছিল না। তাই এই নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। বিকল্প নথি থাকলেই নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।”
উত্তর ২৪ পরগনায় উঠল নতুন প্রশ্ন
সম্প্রতি রাজারহাটে উপনির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক ব্লক লেভেল অফিসার (BLO)। তাঁদের অভিযোগ, ২০০২ সালের তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁদের অনেকের নামই সর্বশেষ ভোটার তালিকায় আর নেই।
এনিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে নতুনভাবে যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, যাতে কোনও প্রকৃত ভোটার বাদ না পড়েন।
আরও পড়ুন: ইপিএফও সদস্যদের জন্য বড় পরিবর্তন: সহজ হল টাকার তোলার নিয়ম