মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেছিলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হবে ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনির কাজ। সেই মতোই এদিন সকালে ভিত পুজোর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের সূচনা হয়। তবে এই প্রকল্প ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। জমিদাতাদের একাংশ সরকারি চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের চাঁদা মৌজার সরকারি ‘ভেস্টেড ল্যান্ড’-এ প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক বিধান রায়। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে সরকারি জমিতে খনন কাজ শুরু হয়েছে। কাউকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না, এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে গাছ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
তবে খনি প্রকল্পের কাজ শুরু হতেই জমিদাতাদের একাংশ দাবি তোলে, সরকার যেন আগে চাকরির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে। স্থানীয় এক জমিদাতা নিটু শেখ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “শিল্প হলে আমাদের ভালো, কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু সরকারের উচিত জমিদাতাদের আগে চাকরি দেওয়া, তাহলে আমরা আরও আশ্বস্ত হতে পারব।”
একই সুরে স্থানীয় আলি হোসেন জানান, “এক বছর আগে জমির কাগজ জমা দিয়েছি, কিন্তু এখনও চাকরি পাইনি। আমরা শিল্পের বিরোধিতা করছি না, কিন্তু চাকরির নিশ্চয়তা চাই।”
এই প্রসঙ্গে জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “চাকরির আবেদন যাঁরা আগে করেছেন, তাঁরা আগে পাচ্ছেন। খনি প্রকল্পে স্থানীয়দেরই কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে।” পুলিশ সুপার আমনদীপও জানিয়েছেন, “কিছুটা অসন্তোষ দেখা দিলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দিয়েই সব সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।”
প্রকল্পের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “ডেউচা-পাঁচামি প্রকল্প বাংলার শিল্পায়নের গতিপথ বদলে দেবে। এখানে বিপুল পরিমাণ কয়লা ও ব্যাসল্ট রয়েছে, যা রাজ্যের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।”
প্রাথমিক পর্যায়ে ৩২৬ একর জমিতে খোলা মুখ খনির কাজ শুরু হচ্ছে, যেখানে ৩৫,০০০ কোটি টাকার লগ্নির সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারের মূল লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব কয়লা উত্তোলন শুরু করা। শিল্পমহলও এই প্রকল্পকে স্বাগত জানিয়েছে।