বীরভূমের দেউচা পাচামি কয়লা খনি প্রকল্পের কাজে ধীরগতি এবং জমি অধিগ্রহণ নিয়ে উদাসীনতার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের ওপর কড়া বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “সাত দিনের মধ্যে সমস্ত সমস্যা মেটাতে হবে।” এই নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শুক্রবার দেউচা পাচামির পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বীরভূমের মহম্মদবাজারে পৌঁছালেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
মুখ্যসচিবের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের ডিজি রাজীব কুমার, বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের সচিব পিবি সেলিম এবং জেলার অন্যান্য শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সকালেই তাঁরা বোলপুর স্টেশনে এসে মহম্মদবাজার পঞ্চায়েত সমিতি দফতরে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। বৈঠকে দেউচা পাচামি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়, এডিজি (পশ্চিমাঞ্চল) অশোক প্রসাদ, ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) শ্যাম সিংহ, এবং জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়।
বৈঠকের পর স্থানীয় আদিবাসী জনগণের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন মুখ্যসচিব ও অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, জমি অধিগ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলি সমাধানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলামুখ কয়লা খনি প্রকল্প দেউচা পাচামির জন্য বহু মানুষ এখনও জমি দিতে রাজি হননি। জমি অধিগ্রহণ হলেও সঠিক মূল্য ও চাকরির প্রতিশ্রুতি না মেলার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় আদিবাসী সংগঠনগুলি এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা এখানে এসেছি। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয়দের আস্থা অর্জনই এখন সরকারের মূল লক্ষ্য।