কলকাতা: লটারি ব্যাবসার আড়ালে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ! শুক্রবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার লেক মার্কেট অঞ্চলের একটি বহুতল আবাসনে অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। প্রিন্স গোলাম মহম্মদ রোডের ওই আবাসনের একটি ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করেছে ইডি। প্রচুর পরিমাণে টাকা পাওয়ায়, তা গুনতে ব্যাঙ্ক থেকে আনা হয়েছে টাকা গোনার বিশেষ যন্ত্র।
এদিন সকাল থেকেই লেক মার্কেট এবং শহরের আরও একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইডির বেশ কয়েকটি দল। শুধু লেক মার্কেট নয়, শহরের আরও একটি এলাকায় অভিযান চালাতে গিয়ে টাকার হিসাব রাখতে সেখানেও টাকা গোনার যন্ত্র নিয়ে যেতে হয়েছে। ইডি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকেই কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার মাইকেল নগরে তল্লাশি চালিয়ে লটারির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার তথ্য সংগ্রহ করেছে তারা।
মাইকেল নগরে অভিযানের সময় সেখানকার একটি লটারি ছাপাখানা ও গুদাম থেকে বেশ কিছু নথি এবং তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সেখানে একটি দোতলা আবাসনে লটারি কোম্পানির পূর্বাঞ্চলের অফিস রয়েছে। ওই আবাসনেই একটি তলায় লটারির টিকিট ছাপার প্রেসও রয়েছে। সেখানে তল্লাশি চালানো হয়। এর পাশাপাশি তদন্তকারীদের একটি দল লেক মার্কেটের চারুচন্দ্র কলেজের কাছে একটি আবাসনে হানা দেয়। সেখানেও তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকেরা।
এই তদন্তে দিল্লি থেকে ইডির একটি বিশেষ দল আসার পর লেক মার্কেটের আবাসনেও তল্লাশি শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে ইডি ধারণা করছে, এই লটারির নামে প্রতারণার সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকতে পারেন।
এর আগে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে একটি লটারি সংস্থার ছাপাখানা এবং গুদামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে অভিযান চালিয়েছিল আয়কর দফতর। সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল, লটারির প্রকৃত পুরস্কারপ্রাপকদের পুরস্কারের টাকা না দিয়ে কোটি কোটি টাকা বেআইনিভাবে সরানো হয়েছে।
বর্তমানে ইডির তল্লাশি চলাকালীন উদ্ধাক করা এই টাকার পরিমাণ ও প্রভাবশালীদের জড়িত থাকার ধারণা নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ইডি জানিয়েছে, তারা এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই প্রতারণার নেপথ্যে থাকা চক্র ও তার জাল কতটা বিস্তৃত তা বের করতে তারা সবরকমের চেষ্টা চালাচ্ছে।